Hospital

বিশেষ মাস্ক মিলছে না সুপার স্পেশ্যালিটিতেও

কিন্তু বিশেষ মাস্কের জোগান না-থাকায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২০ ০১:৪৮
Share:

সতর্ক: মাস্ক পরে রোগী দেখছেন পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। ছবি: সুশান্ত সরকার

করোনা মোকাবিলায় ৬০ শয্যার কোয়রান্টিন ওয়ার্ড তৈরি হচ্ছে উলুবেড়িয়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। কিন্তু কেউ ওই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হলে বিশেষ মাস্ক (এন-৯৫) মিলবে কিনা, সে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। কারণ, সুপার স্পেশ্যালিটিতেও তা বাড়ন্ত!

Advertisement

প্রথমে ঠিক ছিল, ওই হাসপাতালে ৩০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড হবে। কিন্তু রবিবার হাওড়ার জেলাশাসক মুক্তা আর্যের সঙ্গে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের বৈঠকে ঠিক হয়, ওই হাসপাতালে ৬০ শয্যার কোয়রান্টিন ওয়ার্ড এবং চার শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি হবে। সেইমতো দু’টি পৃথক ওয়ার্ড তৈরির কাজ এ দিন থেকেই পুরোদমে শুরু হয়ে যায়।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশেই নতুন ব্যবস্থা। ওই হাসপাতালের চারতলায় ওই দুই ওয়ার্ড করা হচ্ছে। যে সব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী দু’টি ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকবেন, তাঁদের তালিকা তৈরি হয়েছে। অক্সিজেন, নেবুলাইজার প্রভৃতি উপকরণের জন‌্য স্বাস্থ্যভবনকে বলা হয়েছে।

Advertisement

কিন্তু বিশেষ মাস্কের জোগান না-থাকায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।। কারণ, তাঁরা যখন ওই দু’টি ওয়ার্ডে পরিদর্শনে যাবেন, তখন তাঁদের বিশেষ মাস্ক পরতে হবে। না হলে তাঁদের মধ্যেও সংক্রমণ হতে পারে। ওই চিকিৎসকরাই আবার যখন সাধারণ রোগী দেখবেন, তখন তাঁদের মধ্যে দিয়ে সাধারণ রোগীদের মধ্যেও সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকতে পারে। কিন্তু হাসপাতালে ওই মাস্কই নেই।

শুধু কোয়রান্টিন ওয়ার্ড বা আইসোলেশন ওয়ার্ডের জন‌্য নয়, সাধারণ ভাবেও এই হাসপাতালের চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহারের জন্য বিশেষ ধরনের মাস্ক নেই। ২১ জন নিরাপত্তারক্ষী আছেন। তাঁরা সারাদিন বহু মানুষের সংস্পর্শে আসেন। তাঁদেরও বিশেষ মাস্ক দেওয়া হচ্ছে না, জোগান না-থাকায়। এই অবস্থায় চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং নিরাপত্তারক্ষীরা প্রয়োজন হলে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে যে মাস্ক ব্যবহার করা হয়, সেটাই ব্যবহার করছেন। কিন্তু কোয়রান্টিন ওয়ার্ড বা আইসোলেশন ওয়ার্ড পুরোদমে চালু হয়ে গেলে অপারেশন থিয়েটারের মাস্ক যে কাজে লাগবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একটা বড় অংশ। নেই পর্যাপ্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারও। মহকুমা হাসপাতালের ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানেও তা অমিল।

জেলাশাসক অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘হাসপাতালের সুপার যখন যেমন প্রয়োজনের কথা জানাবেন, তা দিয়ে দেওয়া হবে। কোনও সমস্যা হবে না।’’

উলুবেড়িয়ায় খোলা বাজারেও এন-৯৫ মাস্ক অমিল। হাসপাতালের আশপাশে অন্তত ১০০টি ওষুধের দোকান আছে। অধিকাংশ দোকানেই ওই মাস্ক নেই। যে ক’টি দোকানে ছিল, তা এ দিন সকাল পর্যন্ত ঝড়ের গতিতে বিক্রি হয়ে গিয়েছে বলে দোকানিরা জানিয়েছেন। এই অবস্থায় ধুলো থেকে বাঁচার মাস্ক বিক্রির চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। দাম পড়ছে ৫০-৫০০ টাকা পর্যন্ত। এক দোকানি জানান, কলকাতায় পাইকারি বাজারে তাঁদের কাছে বিশেষ ধরনের মাস্কের এত বেশি দাম চাওয়া হচ্ছে যে তা আনতে সাহস করেননি। অমিল হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারও।

পলাশ চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তি এ দিন একটি ওষুধের দোকানে আসেন বিশেষ মাস্ক কিনতে। তাঁকে দোকানদার একটি ৫০০ টাকা দামের মাস্ক দেন। পলাশবাবু বলেন, ‘‘মাস্কটির প্যাকেটে লেখা ছিল তা সেটি ধুলোর জন্য। এটা তো আমার দরকার নেই। তাই কিনিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন