Coronavirus

ঝুলল তালা, ‘কোয়রান্টিনে’ সেই নার্সিংহোম

নার্সিংহোমের আয়া বা সাফাইকর্মীদের অনেকে ঘিঞ্জি এলাকায় থাকেন। প্রত্যেককেই কোয়রান্টিনে রেখে নজরদারি করা দরকার। প্রশাসনের কাছে আমরা সেই অনুরোধই করছি। বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়, স্থানীয় বাসিন্দাআক্রান্তের পরিবারের লোকেরা জানান, গত ২৪ মার্চ প্রৌঢ়কে ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছিল। শনিবার সেখান থেকে তাঁকে সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

Advertisement

তাপস ঘোষ 

চন্দননগর শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২০ ০৫:০১
Share:

প্রতীকী ছবি

শেওড়াফুলির প্রৌঢ় করোনা আক্রান্ত হতেই স্বাস্থ্য দফতরের আতস কাচের তলায় চলে গেল চন্দননগরের বড়বাজারের সেই নার্সিংহোম। সোমবার দুপুরে সেখানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ভিতরে রয়ে গেলেন ১০ জন রোগী, তিন জন নার্স, সাত জন আয়া, এক জন সাফাইকর্মী এবং দু’জন রাঁধুনি। ১৪ দিন তাঁরা বেরোতে পারবেন না। এক অর্থে গোটা নার্সিংহোমই চলে গেল ‘কোয়রান্টিনে’। কারণ, জ্বরের উপসর্গ নিয়ে ওই প্রৌঢ় পাঁচ দিন ওই নার্সিংহোমেই ভর্তি ছিলেন।

Advertisement

আক্রান্তের পরিবারের লোকেরা জানান, গত ২৪ মার্চ প্রৌঢ়কে ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছিল। শনিবার সেখান থেকে তাঁকে সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। রবিবার রাতে তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। এর পরেই হুগলি জেলা প্রশাসনের তরফে চন্দননগরের ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দেওয়া হয়।

সোমবার দুপুরে চন্দননগর মহকুমা প্রশাসনের তরফে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে একটি লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়। তাতে জানানো হয়, জেলাশাসক এবং জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে এ দিন থেকেই নার্সিংহোমে রোগী ভর্তি বন্ধ রাখতে হবে। হাসপাতালে এই মুহূর্তে ভর্তি থাকা রোগীদের ছাড়া যাবে না। রোগী-সহ যাঁরা ভিতরে রয়েছেন, তাঁরাও বেরোতে পারবেন না। বাইরের কেউ নার্সিংহোমের ভিতরে ঢুকতে পারবেন না। এই বিধি মানতে হবে আগামী ১৪ দিন। নিয়মের অন্যথা হলে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

প্রশাসনের খবর, নার্সিংহোমের ভিতরে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের জন্য পর্যাপ্ত খাবার কর্তৃপক্ষই মজুত করেছেন। নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুযায়ী নার্সিংহোমে জীবাণুনাশক ছড়ানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।

নার্সিংহোমের যে চিকিৎসক প্রৌঢ়ের চিকিৎসা করেছিলেন, সোমবার সকালেই তাঁকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালের করোনা সংক্রান্ত আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হয়েছে।

নার্সিংহোম সূত্রের খবর, এখানে চিকিৎসকের সংখ্যা ৭-৮ জন। এ ছাড়াও ১৮ জন নার্স, ২৮ জন আয়া এবং ৮ জন রান্নাঘরের কর্মী রয়েছেন। সকলের উপরেই নজর রাখা হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন। এখানে চিকিৎসাধীন থাকা প্রৌঢ়ের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়তেই নার্সিংহোমের কর্মীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। বাড়িতে থাকা বেশ কয়েক জন কর্মী এ দিন সকালে নার্সিংহোমের সামনে চলে আসেন। তাঁরা জানান, তাঁরাও ওই রোগীর সংস্পর্শে এসেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে কী করণীয় তাঁরা বুঝতে পারছেন না।

ওই নার্সিংহোমে করোনা আক্রান্ত ভর্তি থাকার খবরে এলাকার বাসিন্দারাও চিন্তিত। স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নার্সিংহোমের আয়া বা সাফাইকর্মীদের অনেকে ঘিঞ্জি এলাকায় থাকেন। প্রত্যেককেই কোয়রান্টিনে রেখে নজরদারি করা দরকার। প্রশাসনের কাছে আমরা সেই অনুরোধই করছি।’’

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন