Coronavirus

বারান্দাতেই এক টুকরো মুক্তি

আমার বাইরে যাওয়া বলতে মন্দির বা সামনেই মেয়ের বাড়িতে। তা-ও গত মাসের ২১ তারিখ থেকে সে সবও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২০ ০২:৫৩
Share:

মঞ্জুশ্রী মুখোপাধ্যায়, ভদ্রকালীর বাসিন্দা

সত্তর বছর পেরিয়ে গিয়েছি। সাধারণ ভাবে আমার মতো সত্তরোর্ধ্বদের বাইরের কাজকর্ম অনেকটাই কম যায়। তাই বাড়িতে থাকার একটা সহজাত অভ্যাস তৈরি হয়েই যায়। কিন্তু তুমি চাইলেও বাইরে যেতে পারবে না, এই বাধ্যবাধকতা এই বয়সেও খানিক পীড়া দিচ্ছে আমাকে।

Advertisement

আমার বাইরে যাওয়া বলতে মন্দির বা সামনেই মেয়ের বাড়িতে। তা-ও গত মাসের ২১ তারিখ থেকে সে সবও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই দিনগুলোতে একেবারেই ঘরবন্দি রয়েছি। আমাকে খানিকটা বাঁচিয়ে দিয়েছে, আমাদের বাড়ির বারন্দাটা। আমি যে ঘরে থাকি, সেটা একেবারেই রাস্তার পাশে। ঘর লাগোয়া একচিলতে একটা বারান্দা আছে। সেই বারন্দাটাই এখন আমার জগৎ। তার উপর সারাদিনই একটা সরকারি কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছি। পথচলতি যাঁকেই দেখছি, যাঁকে দেখে মনে হচ্ছে বিনা কারণে রাস্তায় বের হয়েছেন, তাঁকেই বাড়িতে যেতে বলছি। কেউ বিরক্ত হচ্ছেন, কেউ আবার বলছেন, তাঁদের কাজের কথা। সকালের অনেকটা সময় এ ভাবেই কাটিয়ে দিচ্ছি। দুপুর হলেই রাস্তাঘাটে লোকজন প্রায় নেই। আমারও কাজ নেই। এই সময়টা আমি পুরোপুরি ঘরবন্দি টিভি-র সামনে। এখন টিভি-তে সিরিয়ালের নতুন এপিসোডগুলো পুরোপুরি বন্ধ। পুরনো সিরিয়ালগুলো ফের দেখানো হচ্ছে। দিনভর টিভিতে করোনার খবরও আর ভাল লাগছে না। পৃথিবী জুড়েই আর কোনও খবর নেই। তাই সময় কাটাতে এখন ভরসা সেই পুরনো সিরিয়ালগুলোই। তবে এত সিরিয়াল দেখি, এই বয়সে আর সে সব পুরোটা মনে থাকে না। তাই পুরনো হলেও কিন্তু খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না আমার। এখানে বিস্মৃতি খানিকটা সুবিধেই করে দিয়েছে আমাদের মতো বয়স্ক মানুষদের। দুপুর থেকে সন্ধ্যা— টানা সিরিয়াল দেখছি। কখনও আবার সিরিয়াল দেখতে দেখতে খানিকক্ষণ ঘুমিয়ে নিচ্ছি। জানি না আরও কতদিন চলবে এই পরিস্থিতি। আপাতত ১৪ তারিখ পর্যন্ত মন প্রস্তুত হয়ে আছে। তারপর লকডাউনের সময়সীমা আরও বাড়লেও কিছু করার নেই আমাদের। কারণ, কোনও কিছুই আমাদের হাতে নেই। এইভাবেই সন্ধ্যা গড়িয়ে এক সময় রাত নামে। রাতে ফের বারন্দায় ফিরে যাই। ফাঁকা রাস্তাটা এই সময়ে বেশ ভাল লাগে। সঙ্গে হালকা হাওয়া। ঘুম এসে যায়। রাতের চাদর গায়ে জড়িয়ে ফের আরও একটা ঘরবন্দি দিনের শেষ হয়। ফের নতুন দিনের অপেক্ষা…।

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন