Coronavirus

সোশ্যাল মিডিয়ায় রক্তসঙ্কটের প্রচার

সংস্থার সদস্যেরা জানান, রিষড়ার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এক কিশোরীর পাড়া থেকে ছ’জন এসে এ দিন রক্ত দিয়েছেন ওয়ালশ হাসপাতালে এসে। শ্রীরামপুর পুরসভার এক নির্দল কাউন্সিলরের উদ্যোগে ওই রক্তদাতাদের নিয়ে আসা এবং বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২০ ০৪:৫৫
Share:

প্রতীকী ছবি

করোনার জেরে হুগলির সরকারি ব্লাডব্যাঙ্কগুলিতে রক্তের আকাল। সেই সঙ্কট কাটাতে সোশ্যাল মিডিয়াতেও শুরু হয়ে প্রচার। মিলছে সাড়া।

Advertisement

শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে রক্তের ভাঁড়ার শেষ হয়ে এসেছিল। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের শরীরে রক্ত পৌঁছবে কী করে, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে হাল ধরে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠন। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি তুলে ধরে তারা। পরিস্থিতির কথা জানতে পেরে শনিবার বিভিন্ন জায়গা থেকে বেশ কিছু মানুষ হাসপাতালে চলে আসেন রক্ত দিতে। ৩২ জনের রক্ত নেওয়া হয়।

ওই সংস্থার সদস্যেরা জানান, রিষড়ার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এক কিশোরীর পাড়া থেকে ছ’জন এসে এ দিন রক্ত দিয়েছেন ওয়ালশ হাসপাতালে এসে। শ্রীরামপুর পুরসভার এক নির্দল কাউন্সিলরের উদ্যোগে ওই রক্তদাতাদের নিয়ে আসা এবং বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়। এ দিন হাসপাতালে এসে রক্ত দিয়েছেন শ্রীরামপুর পুরসভার কাউন্সিলর ঝুম মুখোপাধ্যায়ও। ওই পুরসভার কাউন্সিলর সন্তোষ সিংহ বলেন, ‘‘আমরা ঠিক করেছি, সোমবার থেকে নিয়মিত হাসপাতালে রক্তদাতা এনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করব।’’

Advertisement

শ্রীরামপুরের শ্রমজীবী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও রক্তসঙ্কট মেটাতে মানুষের কাছে দরবার করছেন। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই মানুষ এসে রক্ত দিয়ে যাচ্ছেন। করোনা পরিস্থিতিতে যাবতীয় সুরক্ষা বজায় রেখে ব্লাডব্যাঙ্কে নিয়ে গিয়ে তাঁদের থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। রবিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখানে দফায় দফায় মোট ২৮ জন রক্ত দেন। তাঁদের মধ্যে শ্রীরামপুরের পটুয়াপাড়া এলাকার একটি দুর্গাপুজো কমিটির ১২ জন ছিলেন। কলকাতা থেকেও চার রক্তদাতা এসেছিলেন। হাসপাতালের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘‘সঙ্কটের সময়ে অনেকেই এগিয়ে আসছেন। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশু এবং অন্য রোগীদের জন্য রক্ত জোগাড়ে তাঁরাই ভরসা জোগাচ্ছেন।’’

আরামবাগ, চন্দননগর মহকুমা হাসপাতাল, চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতাল— সর্বত্রই হাসপাতালে এসে রক্ত দিচ্ছে‌ন সাধারণ মানুষ। কেউ রক্ত নিতে এলে তাঁকেও বলা হচ্ছে রক্তদাতা জোগাড় করে আনতে। শনিবার আরামবাগ হাসপাতাল ৪২ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করেছে। করোনা পরিস্থিতিতে আতান্তরে পড়েছিলেন মগরার সুকান্তপল্লির নয়ন মিস্ত্রি। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত তাঁর এক বছর ন’মাসের ছেলে রক্ত না-পেয়ে কাহিল হয়ে পড়ছিল। কোনও রক্তদাতা জোগাড় করতে পারেননি নয়ন। বিষয়টি জানতে পেরে এ দিন মগরা-১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রঘুনাথ ভৌমিক চুঁচুড়া সদর হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে গিয়ে রক্ত দেন। সেই রক্ত দেওয়া হয় শিশুটিকে।

নয়ন বলেন‌, ‘‘খুব সমস্যায় পড়ে গিয়েছিলাম। রক্ত না পেয়ে ছেলেটা কাহি‌ল হয়ে পড়ছিল। রঘুনাথবাবু খুব উপকার করলেন।’’ রঘুনাথ বলেন, ‘‘ছেলেটির রক্তের গ্রুপ ‘ও পজিটিভ’। আমারও তাই। বাচ্চাটার উপকারে লাগতে পেরে ভাল লাগছে।’’

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন