মারধরে অভিযুক্ত কাউন্সিলরের স্বামী

অভিযোগ, প্রোমোটারের অফিসে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুরের কাজে বাধা দেওয়ার জন্য কর্মীদের মারধর করা হয়। এক জন কর্মীর পেটে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৮ ০২:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

দাবি মতো টাকা দিতে অস্বীকার করায় এক প্রোমোটারের অফিসে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বামীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, প্রোমোটারের অফিসে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুরের কাজে বাধা দেওয়ার জন্য কর্মীদের মারধর করা হয়। এক জন কর্মীর পেটে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত কর্মীর নাম আব্দুল করিম।

Advertisement

ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে হাওড়ার শিবপুর ট্রামডিপোর কাছে জিটি রোডের পাশে একটি নির্মীয়মাণ বহুতলে। অভিযোগ, হাওড়া পুরসভার ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শামিমা বানুর স্বামী ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল সভাপতি শামিম আহমেদ ওরফে ‘বড়ে’ একটি অনুষ্ঠানের জন্য প্রোমোটার মোক্তার আহমেদের কাছ থেকে ২০ লক্ষ টাকা চান। পুলিশ জানায়, প্রোমোটার টাকা দিতে অস্বীকার করায় অভিযুক্তের নেতৃত্বে একদল দুষ্কৃতী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ওই প্রোমোটারের অফিসে ভাঙচুর চালায়। বাধা দিলে প্রোমোটার, তাঁর শ্যালক শাকিল আহমেদ এবং দুই কর্মী আব্দুল করিম ও আব্দুল কাদেরকে রাস্তায় ফেলে পেটানো হয়। আহত আব্দুলকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর পরেই শিবপুর থানায় শামিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন প্রোমোটারের স্ত্রী শায়িদা আঞ্জুম।

বৃহস্পতিবার বহুতলের একতলার অফিসঘরে ঢুকে দেখা গেল, টেবিলের কাচ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। দরজার কাচও ভাঙা। বুধবারের ঘটনার পরে আতঙ্ক কাটেনি প্রোমোটারের পরিবারের। এ দিন মোক্তার আহমেদ বলেন, ‘‘বড়ে হুমকি দিয়ে বলেছে, এলাকায় নির্মাণ করতে গেলে মোট লাভের ৩০ শতাংশ দিতে হবে। এমনকি তাকে ব্যবসার অংশীদার করতে হবে। না হলে কাজ করতে দেওয়া হবে না।’’ প্রোমোটারের স্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘পাড়ার অনুষ্ঠানের জন্য বড়ে ২০ লক্ষ টাকা দাবি করে।’’

Advertisement

অভিযোগের বিষয়ে জানতে কাউন্সিলরকে ফোন করা হলে দুপুর থেকে তাঁর মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। বড়ে অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘সব মিথ্যে। ওই প্রোমোটার কর্মীদের ঠিক মতো টাকা দেন না। এমনকি ওই জায়গা থেকে ভাড়াটেদের তুলতে যে টাকা দেওয়ার কথা হয়েছিল, তা-ও দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে কথা বলতে গিয়েছিলাম। আমি চলে আসার পরে সঙ্গে থাকা লোকেরা হয়ত মারধর করেছে। আমি কিছুই জানি না।’’

স্থানীয়দের অভিযোগ, এর আগে বিভিন্ন ঘটনায় বড়ের নাম জড়ালেও পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘শাসকদলের কাউন্সিলরের স্বামী বলে বড়ের এত বাড়বাড়ন্ত। এলাকায় কোনও নির্মাণ হলেই তাঁকে মোটা টাকা দিতে হয়। তবেই কাজ করতে পারেন প্রোমোটার। সব জেনেও চোখ বন্ধ রেখেছে শিবপুর থানা।’’

হাওড়া জেলার তৃণমূল সভাপতি অরূপ রায় বলেন, ‘‘ঘটনাটি শুনেছি। পুলিশকে বলা হয়েছে, তদন্ত করে সঠিক বিষয়টি বার করতে। দোষ যে-ই করুক তার শাস্তি হবে।’’ হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। মারধরে শামিম আহমেদ যুক্ত কি না তা দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন