বিদেশি আইন লঙ্ঘন, প্রতারণা করে এ দেশের নাগরিকত্বের নথিপত্র তৈরি-সহ বিভিন্ন অভিযোগে পাঁচ বছর আগে উত্তর ২৪ পরগনার টিটাগড় থেকে পাঁচ জন পাকিস্তানিকে গ্রেফতার করেছিল হুগলির শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। বুধবার তাঁদের পাকিস্তানে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল শ্রীরামপুর আদালত। এসিজেএম মৃণালকান্তি মণ্ডল এই রায় দেন।
আইনজীবী সূত্রের খবর, ২০১২ সালের পয়লা জুলাই ওই পাঁচ জন গ্রেফতার হয়েছিলেন। ধৃতদের নাম নবাব খান, শাজয়ান বেগম, আমির খান, ইশরাত খান এবং আজরা খান। তাঁদের বাড়ি করাচিতে। ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে পঞ্জাবের আটারি সীমান্ত দিয়ে তাঁরা ভারতে ঢোকেন। প্রথমে তাঁরা রিষড়ার আর কে রোডে এক পরিচিতের বাড়িতে থাকতেন। পরে চলে যান উত্তর ২৪ পরগনার টিটাগড়ে। জাল নথি তৈরি করে এখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেন। সেখান থেকেই তাঁদের ধরা হয়। হুগলি জেলা গোয়েন্দা দফতরের (ডিইবি) তরফে তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছিল। ওই দফতরই তদন্ত করে।
তদন্তকারীরা জানতে পারেন, বাসস্থানের সংশাপত্রকে (রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট) হাতিয়ার করে তাঁরা এখানে প্যান কার্ড থেকে শুরু করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট-সহ অন্যান্য নথিপত্র তৈরি করিয়ে ফেলেছিলেন।
শ্রীরামপুর আদালতে পাসপোর্ট আইন, বিদেশি আইন, প্রতারণার অভিযোগে মামলা শুরু হয়। দীর্ঘদিন শুনানি চলে। অভিযুক্তদের আইনজীবী অশোক সেন তাঁদের ভারতীয় নাগরিকত্ত্ব পাওয়ার ব্যাপারে সওয়াল করেন। তবে অভিযুক্তদের কাছে পাকিস্তানের ভিসা এবং পাসপোর্ট মেলে। আদালত জানিয়ে দেয়, তারা পাকিস্তানের নাগরিক।
মামলার সরকারি পক্ষের আইনজীবী অতনু সাহা জানান, পাসপোর্ট আইনের ১২ নম্বর ধারা এবং বিদেশি আইনের ১৪ নম্বর ধারায় বিচারক তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করেন। তাঁদের ৬ মাস কারাদণ্ড এবং ১ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১০ দিন কারাবাসের সাজা শোনান। তাঁদের দেশে ফেরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় আদালত। ধরা পড়া ইস্তক ওই পাঁচ জন জেলেই রয়েছেন। ফলে কারাবাসের সাজার মেয়াদ কাটিয়ে ফেলেছেন তাঁরা।