সঙ্কেত: কালো মেঘে বার্তা দুর্যোগের। বৃহস্পতিবার দুপুরে আরামবাগে। ছবি: মোহন দাস
কোথাও অটোতে মাইক বেঁধে, কোথাও হ্যান্ড-মাইক নিয়ে চলছে প্রচার। সোশ্যাল মিডিয়াতেও একই বিষয়ে পোস্ট।
নির্বাচনের ভরা মরসুমে এই প্রচার ভোট দেওয়ার আর্জিতে নয়। বরং সতর্ক থাকার। ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ নিয়ে বৃহস্পতিবার হুগলির নানা জায়গায় সাধারণ মানুষকে সতর্ক করতে প্রশাসনের তরফে প্রচার করা হল। জানানো হল, দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসন তৈরি। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘জনজীবনে ঝড়বৃষ্টির প্রভাব পড়লে দ্রুত মোকাবিলার জন্য সংশ্লিষ্ট সব দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নবান্ন থেকেও এমন নির্দেশ এসেছে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, দ্রুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় পূর্ত, জনস্বাস্থ্য কারিগরি, সেচ, খাদ্য পূর্ত প্রভৃতি দফতরের আধিকারিকদের তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীদের তৈরি রাখা হচ্ছে। নদীতে প্রয়োজন হলে স্পিডবোট নামানো হবে।
বিভিন্ন পুরসভা বা পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, দুর্যোগ মোকাবিলায় সতর্কতামূলক সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। চন্দননগরের পুর-কমিশনার স্বপন কুণ্ডু জানান, গঙ্গার ধারে অস্থায়ী ভাবে বসবাসকারী লোকজনকে নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে বলা হয়েছে। বৃষ্টিতে কোনও জায়গা জলমগ্ন হলে সাফাই বিভাগ দ্রুত জমা জল সরাবে। গাছ উপড়ে রাস্তা বন্ধ হলে দ্রুত তা সরানো হবে। কাঁচাবাড়ির চালা উপড়ে গেলে ত্রিপল দেওয়া হবে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
রিষড়া পুরসভার তরফে ফেরিঘাটে নোটিস দিয়ে জানানো হয়েছে, ঝড়বৃষ্টিতে রিষড়া-খড়দহ ফেরি চলাচল বন্ধ করা হতে পারে। পুরপ্রধান বিজয় মিশ্র বলেন, ‘‘আপৎকালীন প্রয়োজনে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। শুকনো খাবার বা ত্রিপল মজুত থাকছে।’’ পান্ডুয়া ব্লকের জামগ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে এ দিন অটোতে প্রচার করা হয় গ্রামবাসীদের সতর্ক করতে। চুঁচুড়া-মগরা ব্লকেও প্রচার হয়েছে। বলাগড়ের বিডিও সমিত সরকার বলেন, ‘‘গঙ্গার তীরবর্তী এলাকা বা বিভিন্ন ঘাটে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।’’
আরামবাগের মহকুমাশাসক লক্ষ্মভব্য তান্নিরু বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন। তাঁর নির্দেশ, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে কোনও শিশু যেন না আসে। তাদের খাবার বাড়িতে পৌঁছে দিতে হবে। প্রয়োজনে স্কুল ভবনকে ত্রাণকেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার করা হবে। ওষুধ-খাদ্য, ত্রিপল মজুত রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুর্বল এবং ভঙ্গুর নদীবাঁধ মেরামতের প্রয়োজনে বালির বস্তা রাখতে বলা হয়েছে। মহকুমার ৬৩টি পঞ্চায়েতকে সতর্ক করে চিঠি পাঠানো হয়েছে বিভিন্ন ব্লক প্রশাসনের তরফে। মহকুমাশাসক এবং বিডিও কার্যালয়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
কৃষি দফতরের তরফেও এ দিন সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে মাইকে প্রচার চালানো হয়। ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাসে শেষ পর্বের প্রচার নিয়ে চিন্তায় পড়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।