আরশোলায় নাজেহাল রেলযাত্রীরা

আরশোলা বাহিনীর দৌরাত্ম্যে কামরায় থাকা যাত্রীরাও তখন ভয়ে কাঁটা। কেউ নিজেকে আড়াল করতে ব্যস্ত, কেউ ব্যস্ত আরশোলা নিধনে। বিরক্ত যাত্রীদের অনেকেই পরের স্টেশনে কামরা বদল করলেন।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৭ ০১:২৮
Share:

আতঙ্ক: ট্রেনে এখন যাত্রাসঙ্গী আরশোলাও। ছবি: কুনাল বর্মণ।

বাবা-মায়ের সঙ্গে কলকাতা ঘুরতে এসেছিল ছোট্ট তিন্নি। সন্ধ্যায় হাওড়া থেকে পাঁশকুড়া লোকালে উঠে জানালা দিয়ে দৃশ্য দেখতে মশগুল ছিল আন্দুলের বাসিন্দা বছর আটেকের শিশুটি। সাঁতরাগাছি পার হতেই বিপত্তি। ট্রেনের ভিতরে তিন্নির আশপাশে উড়ে এল কয়েকটি আরশোলা! ভয়ে তখন চিৎকার শুরু করেছে মেয়েটি।

Advertisement

আরশোলা বাহিনীর দৌরাত্ম্যে কামরায় থাকা যাত্রীরাও তখন ভয়ে কাঁটা। কেউ নিজেকে আড়াল করতে ব্যস্ত, কেউ ব্যস্ত আরশোলা নিধনে। বিরক্ত যাত্রীদের অনেকেই পরের স্টেশনে কামরা বদল করলেন। যে কামরায় তিলধারণের জায়গা ছিল না, সেখানেই মুহূর্তে জায়গা হয়ে গেল।

দূরপাল্লার ট্রেনে আগে থেকেই আরশোলা-ছারপোকার অত্যাচার ছিল। নিত্যযাত্রীদের অভিজ্ঞতা, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখা ও পূর্ব রেলের লোকাল ট্রেনেও এখন আরশোলার আতঙ্ক। বজবজ-শিয়ালদহ শাখার ট্রেনে একই ভাবে সরব উপস্থিতি আরশোলার। নিত্যযাত্রীদের প্রশ্ন, টিকিট কেটে ট্রেনে ওঠা মানে কি কোনও মতে গন্তব্যে পৌঁছনো? সময় বদলেছে। লোকাল ট্রেনের পরিষেবা এ বার আরও উন্নত করুক রেল। সময়সূচি মেনে ট্রেন চলা ও ট্রেনের পরিচ্ছন্নতা এটুকুই দাবি— বলছেন যাত্রীরা।

Advertisement

দেশজোড়া স্বচ্ছ ভারত অভিযানের ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। অথচ তাদেরই গুরুত্বপূর্ণ ‘ঘর’ রেলেই আরশোলার হামলা! নিত্যযাত্রীদের মতে, এই আরশোলা তাড়াতে আরপিএফ নয়, ঝাড়ুদারই যথেষ্ট। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার বেশিরভাগ রেকই নতুন। কিন্তু তার মধ্যে বেশ কিছু পুরনো রেক দেদার ছুটছে। সেগুলিতেই সমস্যা বেশি বলে দাবি যাত্রীদের। পূর্ব রেলেও একই সমস্যা।

যদিও রেলের তরফে এর দায় অনেকটাই চাপানো হয়েছে যাত্রীদের উপরে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ জানান, প্রতিদিন রেক পরিষ্কার হয়। তিন থেকে চার দিন অন্তর টিকিয়াপাড়া কারশেডে জল দিয়ে ধোয়া হয়। যাত্রীরা যাত্রাপথে ঝালমুড়ি, মটর ফেলেন। এতেই বাড়ছে আরশোলার উপদ্রব।

তিনি বলেন, ‘‘পোকা মারতে ট্রেনের ভিতরে নিয়মিত কীটনাশক দেওয়া হয়।’’ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, ‘‘সমস্যার সমাধানে একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তাঁদের পরামর্শ নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন