স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার নালিশ

বাবার শাস্তি চাইলেন মেয়ে

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে এক দম্পতির পারিবারিক অশান্তি চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। তারই পরিণতিতে স্ত্রীকে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় সহযোগিতার অভিযোগে তাঁদের পড়শি এক মহিলাকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বলাগড় শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৬ ০২:০২
Share:

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে এক দম্পতির পারিবারিক অশান্তি চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। তারই পরিণতিতে স্ত্রীকে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় সহযোগিতার অভিযোগে তাঁদের পড়শি এক মহিলাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার রাতে বলাগড়ের ডুমুরদহ-ঘোষালিয়া গ্রামের বাসিন্দা শিউলি হালদার নামে ওই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, মূল অভিযুক্ত বিশ্বনাথ হালদার পলাতক। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে। তার বিরুদ্ধে চোলাই এবং হেরোইনের ব্যবসা চালানোর অভিযোগও রয়েছে।

Advertisement

গত ৩১ ডিসেম্বর সকালে বিশ্বনাথের স্ত্রী অণিমা হালদারকে (৩৪) অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গত ২ জানুয়ারি তিনি মারা যান। এর পরেই তাঁর বাপেরবাড়ির লোকজন বিশ্বনাথ ও শিউলির বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। মৃতার বড় মেয়ে সুলতা পালও তাঁর বাবার বিরুদ্ধে মাদকের ব্যবসা চালানো এবং বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে তাঁর মায়ের উপরে অত্যাচারের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘মাকে সরিয়ে বাবা পথের কাঁটা দূর করতে চেয়েছিল। আমরা চাই বাবার এবং ওই মহিলার যেন উপযুক্ত শাস্তি হয়।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বনাথ-অণিমাদেবীর চার মেয়ে। সকলেই বিবাহিত। বিশ্বনাথ আগে দিনমজুরের কাজ করতেন। ইদানীং মাদক কেনাবেচার ব্যবসা চালাত। সেই সুবাদেই তার সঙ্গে একাধিক মহিলার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সব মহিলার মধ্যে শিউলিও রয়েছে। অণিমাদেবী শিউলির কথা জানতে পেরে প্রতিবাদ করেছিলেন। তার পর থেকেই অণিমাদেবীর উপরে নির্যাতন শুরু হয় বলে অভিযোগ। মেয়েরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

Advertisement

অভিযোগ, গত ৩১ ডিসেম্বর সকালে বিশ্বনাথ স্ত্রীর মুখ বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে পিছন থেকে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাঁর চিৎকারে পড়শিদের সন্দেহ এড়াতে বিশ্বনাথ স্ত্রীকে বাড়ির কলের সামনে নিয়ে গিয়ে জল ঢালতে শুরু করে। পড়শিদের সে জানায়, রান্না করতে গিয়ে স্ত্রীর গায়ে আগুন লেগেছে। সেই সময় ওই বাড়িতে শিউলিও ছিল বলে পড়শিরা পুলিশকে জানিয়েছিলেন। অণিমাদেবীকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরেই বাড়ি ছেড়ে বিশ্বনাথ পালায়। এর পরেই তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। ধৃত শিউলিকে রবিবার চুঁচুড়া আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাকে ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

মৃতার বড় মেয়ে বলেন, ‘‘বাবা যখন দিনমজুরের কাজ করত তখন সংসারে কোনও অশান্তি ছিল না। মাদকের ব্যবসা শুরু করতেই কাঁচা পয়সার মুখ দেখতে থাকে। সংসারে অশান্তি শুরু হয়ে যায়।’’ স্থানীয় বাসিন্দারাও বিশ্বনাথের আপত্তিকর কাজকর্ম নিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে হারাধন প্রামাণিক বলেন, ‘‘বিশ্বনাথ চোলাইয়ের ব্যবসা করে এলাকা দূষিত করে ফেলেছিল। প্রতিবাদ করলে হুমকি দিত। অন্য মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক করে স্ত্রীর উপর অত্যাচার চালাত। ওর যেন উপযুক্ত শাস্তি হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন