শ্রীরামপুরে ডেঙ্গিতে মৃত্যু, মানছে না পুরসভা

ডেঙ্গি-আতঙ্কে কাঁপতে থাকা শ্রীরামপুরে পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে মশার লর্ভা নিধন চলছেই। তার মধ্যেই শনিবার সকালে শহরের ডেঙ্গি-আক্রান্ত এক যুবকের মৃত্যু হল কলকাতার খিদিরপুর এলাকার একটি নার্সিংহোমে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৬ ০১:১৭
Share:

চিহ্নিত অংশে মৃত্যুর কারণ উল্লেখ রয়েছে।

ডেঙ্গি-আতঙ্কে কাঁপতে থাকা শ্রীরামপুরে পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে মশার লর্ভা নিধন চলছেই। তার মধ্যেই শনিবার সকালে শহরের ডেঙ্গি-আক্রান্ত এক যুবকের মৃত্যু হল কলকাতার খিদিরপুর এলাকার একটি নার্সিংহোমে। অসিত দাস (৩৪) নামে ওই যুবক শ্রীরামপুর স্টেশন সংলগ্ন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কুমিরজলা রোডের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর শংসাপত্রে ওই নার্সিংহোমের চিকিৎসকেরা ডেঙ্গির কথা লিখলেও তা মানতে নারাজ পুরসভা।

Advertisement

কিছুদিন আগেই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এ শহরের দু’জনের মৃত্যু হয়েছিল। দু’জনেরই প্লেটলেট অনেক কমে গিয়েছিল। এ ছাড়াও অনেক সমস্যা ছিল বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছিল। তখনই শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৪৫০ ছুঁয়েছিল। পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দফতর ফিভার-ক্লিনিক খোলে। এলাকার পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার উপরে জোর দেওয়া হয়। নালা-নদর্মায় ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো শুরু হয়। কিন্তু এ সবের পরেও ডেঙ্গিতে মৃত্যু রোখা গেল না।

অসিতের বাড়ির লোকজন জানান, ডেঙ্গিতে তাঁর কিডনি, ফুসফুস এবং লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। অসিতের মা এবং এক আত্মীয়াও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁরা অবশ্য এখন সুস্থ আছেন। শ্রীরামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল (স্বাস্থ্য) সুপ্রীতি মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘ওই যুবক ডেঙ্গিতে মারা যাননি। ওঁর অন্য সমস্যা ছিল।’’ কিন্তু অসিতের মৃত্যুর শংসাপত্র অন্য কথা বলছে। মৃতার বোন মৌমিতা পালও বলেন, ‘‘দাদা পুরোপুরি সুস্থ ছি‌ল। ডেঙ্গিতেই ওর কিডনি, ফুসফুস এবং লিভার আক্রান্ত হয়। তাতেই এ ভাবে অকালে চলে গেল দাদা।’’

Advertisement

মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ির সামনে গ্যারাজে সাইকেল-মোটরবাইক জমা রাখার কাজ করতেন আশিস। গত ৪ অগস্ট তাঁর জ্বর হয়। প্রাথমিক ভাবে প্যারাসিটামল দেওয়া হয়। পুরসভার ফিভার ক্লিনিকে রক্ত পরীক্ষায় শরীরে ডেঙ্গি-জীবাণুর উপস্থিতি ধরা পড়ে। জ্বর না কমায় ৭ অগস্ট কোন্নগরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। তখনই তাঁর কিডনি এবং ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা যায়। তাঁর প্লেটলেট নেমে যায় ২৭ হাজারে। কোন্নগর থেকে ৯ অগস্ট আশিসকে খিদিরপুরের নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করানো হয়। গত কয়েক দিনে সেখানে পাঁচ বার তাঁর ডায়ালিসিস হয়। যদিও অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। শনিবার তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে সরানোর পরিকল্পনা করেন বাড়ির লোকেরা। কিন্তু সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ‌ তিনি মারা যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন