অবরোধ: গোলমালের পরে বিক্ষোভ স্থানীয় মহিলাদের। রবিবার, লিলুয়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
ডেঙ্গি প্রতিরোধে প্রতিটি পুরসভাকে সক্রিয় হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু হাওড়া পুরসভার একটি ওয়ার্ডে সেই নির্দেশ পালন করা হয়নি বলে অভিযোগ। রাস্তার পাশেই স্তূপাকৃতি আবর্জনা ও নর্দমার জল জমে থাকায় ক্ষোভ বাড়ছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। ঠিক যে দিন তাঁরা এলাকা পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন, সে দিনই পুর স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে ‘স্বাস্থ্য সচেতনতা’-র প্রচারে এলাকায় এলেন কাউন্সিলর। স্থানীয় বাসিন্দাদের রোষের মুখেও পড়লেন তাঁরা। এমনকী, শাসক দলের কর্মীদের রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। হেনস্থা করা হয় পুরকর্মীদেরও।
ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ, হাওড়া পুরসভার ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের কুমোরপাড়ার বেদিমন্দির এলাকায়। এক দিকে পুরকর্মীরা, অন্য দিকে বাসিন্দাদের মধ্যে বেধে যায় হাতাহাতি। কার্যত শিকেয় ওঠে মশা নিধনের কাজ। রাস্তায় ফেলে পুরকর্মীদের মারধর থেকে শুরু করে টেনে-হিঁচড়ে তাঁদের জামা-কাপড় ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পাল্টা স্থানীয় বাসিন্দাদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে। তাঁদের মারধরের প্রতিবাদে পথ অবরোধ করেন এলাকার মহিলারা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। যদিও এই ঘটনায় বিরোধীদের উস্কানি রয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় কাউন্সিলর নারায়ণ মজুমদার।
পুরসভা সূত্রের খবর, সচেতনতা প্রসারের জন্য গাড়ি নিয়ে এ দিন বেলায় নারায়ণবাবুর নেতৃত্বে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের সাফাই বিভাগ এবং তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা ওই এলাকায় যান। নর্দমায় ব্লিচিং, মশা মারার তেল ছড়ানো এবং ধোঁয়া স্প্রে করা শুরু করতেই গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তার পরেই দু’পক্ষে গোলমাল শুরু হয়। সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে যায় মশা নিধনের কাজ।
স্থানীয় এক বাসিন্দা সঞ্জীব দাস বলেন, ‘‘এত দিন কারও দেখা পাওয়া যায়নি। আজ আমরা নিজেরা যখন উদ্যোগী হয়ে ব্লিচিং ছড়ানোর কাজ করছি, তখন কাউন্সিলরের লোকজন আমাদের আক্রমণ করে। আমরা প্রতিবাদ করি। কাউকে মারধরের ঘটনা ঘটেনি।’’ এক মহিলা নন্দিতা দাস বলেন, ‘‘মশার উৎপাতে এলাকায় টেকা যায় না। অথচ মশা রুখতে কাউন্সিলর এলাকায় কোনও কাজ করেননি।’’
স্বাস্থ্যকর্মীদের মারধর করার ঘটনার নিন্দা করেছেন হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) ভাস্কর ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘এ ধরনের অভিযোগ ঠিক নয়। গোটা পুর এলাকায় ডেঙ্গি দমনে পদক্ষেপ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের হেনস্থা করা হয়েছে পরিকল্পনা করেই।’’ নারায়ণবাবু বলেন, ‘‘বিরোধীরা এলাকার লোকজনকে উস্কানি দিয়ে ক্ষেপিয়েছে। এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত।’’