Wild pig

ফসল নষ্ট করছে বুনো শুয়োরের দল

চাষিদের অভিযোগ, শুয়োরের তাণ্ডবের কথা স্থানীয় প্রশাসন ও বন দফতরে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁচলা শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:১৯
Share:

অতিষ্ট: নষ্ট হয়ে যাওয়া ফসল দেখাচ্ছেন চাষি। গঙ্গাধরপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

বুনো শুয়োরের অত্যাচারে ক্ষতির মুখে চাষিরা। চাষ কার্যত বন্ধ হতে বসেছে। বুনো শুয়োরের তাণ্ডবের কারণে পাঁচলা ব্লকের গঙ্গাধরপুরের পানিহিজলি গ্রামের প্রায় দেড়শো বিঘা জমিতে চাষ হচ্ছে না বলে স্থানীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছে।

Advertisement

চাষিদের অভিযোগ, শুয়োরের তাণ্ডবের কথা স্থানীয় প্রশাসন ও বন দফতরে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। ব্লক প্রশাসনের তরফে বন দফতরকে শুয়োর ধরার অনুরোধ জনানো হয়েছে। বন দফতরের বক্তব্য, স্থানীয় প্রশাসন চাইলে বুনো শুয়োর ধরার জন্য জাল দেওয়া হবে।

পানিহিজলি গ্রামের চাষি চাঁদু দাসের দাবি, তাঁর আট বিঘা জমি থাকলেও বুনো শুয়োরের তাণ্ডবের কারণে চাষ করেন মাত্র দু’বিঘা জমিতে। তাঁর কথায়, ‘‘প্রত্যেক বছর খরচ করে চাষ করি। কিন্তু ধান পাই না। বারবার বিডিও এবং বন দফতরে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।’’ এ বার দু’বিঘা জমিতে চাষে খরচ করেছেন প্রায় ২৫ হাজার টাকা। কিন্তু ধান পেয়েছেন মাত্র তিন কুইন্টাল, যার বাজারমূল্য মাত্র তিন হাজার টাকা।

Advertisement

ওই চাষি আরও বলেন, ‘‘চাষের উপরে সারা বছর নির্ভর করতে হয়। কী ভাবে চালাব? মহাজনের টাকা কী ভাবে শোধ করব।’’ ওই এলাকার আর এক চাষি মথুর বক্সী বলেন, ‘‘বুনো শুয়োরের ভয়ে চাষ বন্ধ করে দিতে হয়েছে। জমি সারা বছর পড়ে থাকে। মাত্র দেড় বিঘা জমি চাষ করেছিলাম। সব ধান বুনো শুয়োরে খেয়ে নিয়েছে। পেয়েছি শুধু খড়।’’ একই দাবি দুধকুমার দাস ও শ্যামল বক্সী নামে দুই চাষির।

বন দফতরের রেঞ্জ আধিকারিক (উলুবেড়িয়া) নির্মল মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলার বেশ কিছু জায়গা থেকে বুনো শুয়োরের অত্যাচারের খবর পাচ্ছি। বুনো শুয়োর বলে কিছু নেই। কোনও এক সময়ে শুয়োর চরাতে গিয়ে হয়তো কিছু দলছুট হয়ে গিয়েছিল। বংশবিস্তার হওয়ায় তাদের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে।’’ তবে তিনি জানান, স্থানীয় প্রশাসন শুয়োর ধরার জন্য সাহায্য চাইলে বন দফতর তাদের জাল দিতে পারে। জালে পড়লে দফতরের কর্মীরা তাদের উদ্ধার করে অন্যত্র ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে।

বিডিও (পাঁচলা) এষা ঘোষ বলেন, ‘‘ চাষিদের থেকে প্রায়ই অভিযোগ পাওয়া যায় যে, বুনো শুয়োর ফসল নষ্ট করছে। বন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে বন দফতর এ নিয়ে কিছুই করতে চায় না। নানা অজুহাত দেখায়। ব্লকেও কর্মীর অভাব রয়েছে। তাই আমাদের পক্ষে জাল পেতে শুয়োর ধরা সম্ভব নয়। এই দায়িত্ব বন দফতরকেই নিতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন