পুলিশের বিরুদ্ধে নজরদারিতে খামতির অভিযোগ

জলপথে শব্দবাজি ঢুকছে হাওড়ায়

পরিবেশপ্রেমীদের দাবি, পুলিশি নজরদারির ফাঁকে গঙ্গার অপর পাড়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ, নুঙ্গি হয়েই লুকিয়ে-চুরিয়ে আনা হচ্ছে ওই বাজি। শনিবারই বাউড়িয়া ফেরিঘাটে গিয়ে দেখা গেল, একদল যুবক ভুটভুটি ধরার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে। উল্টো দিকেই বজবজ।

Advertisement

নুরুল আবসার ও সুব্রত জানা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০১:২৬
Share:

—ফাইল চিত্র

কালীপুজোতে দেদার শব্দবাজির আওয়াজ থেকে গত বছর পর্যন্ত রেহাই মেলেনি হাওড়া জেলার বাসিন্দাদের। কঠোর নজরদারিতে উলুবেড়িয়ার মালপাড়ায় এখন শব্দবাজির পরিবর্তে শুধু আতসবাজি তৈরি হয় বলে পুলিশের দাবি। তা হলে এত শব্দবাজি আসছে কোথা থেকে?

Advertisement

পরিবেশপ্রেমীদের দাবি, পুলিশি নজরদারির ফাঁকে গঙ্গার অপর পাড়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ, নুঙ্গি হয়েই লুকিয়ে-চুরিয়ে আনা হচ্ছে ওই বাজি। শনিবারই বাউড়িয়া ফেরিঘাটে গিয়ে দেখা গেল, একদল যুবক ভুটভুটি ধরার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে। উল্টো দিকেই বজবজ। যুবকেরা জানান, বজবজ থেকে নুঙ্গি এবং বাখরাহাটে যাবেন তাঁরা। সেখান থেকেই আনবেন চকোলেট বোমা, দোদমা প্রভৃতি শব্দবাজি। ইতিমধ্যে ওই দলের এক জন প্রথম দফায় ৯০০টি চকোলেট বোমা এবং দোদমা এনে ফেলেছেন। যাচ্ছেন দ্বিতীয় পর্যায়ের কেনাকাটায়। এ ভাবে প্রতি বছরই তাঁরা শব্দবাজি এনে বিক্রি করেন বলে জানান।

শুধু ওই ঘাটই নয়, প্রতি বছর দুর্গাপুজোর আগে থেকেই হাওড়া জেলার চেঙ্গাইল, উলুবেড়িয়া, শ্যামপুর-সহ বিভিন্ন ঘাট দিয়ে লঞ্চ-ভুটভুটি এবং মাছ ধরার ছোট নৌকায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে শব্দবাজি আনা হয় বলে পরিবেশপ্রেমীদের দাবি। একই সঙ্গে তাঁদের অভিযোগ, কালীপুজোর দু’তিন দিন আগে থেকে ঘাটগুলিতে পুলিশি নজরদারি চলে ঠিকই। কিন্তু বেশির ভাগ শব্দবাজি তার আগেই জলপথে চলে আসে। তারপরে তা জেলার নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। পরিবেশপ্রেমীরা চান, মালপাড়ায় যেমন শব্দবাজি তৈরি বন্ধ হয়েছে, তেমনই জেলায় যাতে বাইরে থেকেও শব্দবাজি না আসে, সেটা দেখা হোক। না-হলে শব্দবাজির ব্যবহার বন্ধ হবে না।

Advertisement

জেলা (গ্রামীণ ) পুলিশ সুপার সৌম্য রায় অবশ্য দাবি করেন, ‘‘উৎসবের মরসুমে শব্দবাজি রুখতে সর্বত্র নজরদারি রয়েছে। কালীপুজো উপলক্ষে আগামী সোমবার থেকে বিশেষ অভিযান শুরু করা হবে।’’

বাউড়িয়া ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দারাও জানান, বজবজ থেকে শব্দবাজি আনা শুরু হয়ে যায় দুর্গাপুজোর আগে থেকেই। এই সময়ে পুলিশ না-থাকায় অবাধে তা আনা যায়। ঘাট-কর্মীদের হাতে ধরা পড়লে শব্দবাজির কারবারিরা কয়েকটি বেশি টিকিট কেটে নিস্তার পান। যদি কেউ বেশি টিকিট কাটতে না-চান, তখন তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। যদিও বাউড়িয়া ঘাটের কর্মীরা এ কথা অস্বীকার করেন।

কালীপুজোর তিন-চার দিন আগে থেকে অবশ্য জেলার গঙ্গার ঘাটগুলিতে পুল‌িশ পাহারা দেয়। ও পার থেকে আসা যাত্রীদের ব্যাগ পরীক্ষাও করা হয়। অনেকবারই সেই তল্লাশিতে শব্দবাজি বাজেয়াপ্তও করেছে পুলিশ। অনেকেই চান, এমন কড়া তল্লাশি দুর্গাপুজোর আগে থেকে শুরু হোক। তা হলে কালীপুজোয় জেলায় শব্দবাজির তাণ্ডব রোখা যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন