স্থাপত্যের টানে গুপ্তিপাড়ায় পা পড়ছে বিদেশি পর্যটকের

বিদেশি পর্যটকদের যাতায়াত বেড়েছে গুপ্তিপাড়ায়। গঙ্গাপথে বিলাসবহুল জাহাজে চড়ে হুগলির এই জনপদে আসছেন তাঁরা। এখানকার স্থাপত্য, প্রকৃতির রং-রূপের স্বাদ নিচ্ছেন।

Advertisement

প্রকাশ পাল

গুপ্তিপাড়া শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৭ ০১:২৮
Share:

খণ্ডহর: ইতিহাসের স্বাদ নিতে ঘুরছে বিদেশি পর্যটকের দল।

বিদেশি পর্যটকদের যাতায়াত বেড়েছে গুপ্তিপাড়ায়। গঙ্গাপথে বিলাসবহুল জাহাজে চড়ে হুগলির এই জনপদে আসছেন তাঁরা। এখানকার স্থাপত্য, প্রকৃতির রং-রূপের স্বাদ নিচ্ছেন।

Advertisement

গঙ্গার ধারঘেঁষা হুগলির প্রত্যন্ত ব্লক বলাগ়ড়ের এই অঞ্চলে পর্যটনের প্রসারে পরিকাঠামো ঢেলে সাজার দাবি গ্রামবাসীদের নতুন নয়। কিছু বিক্ষিপ্ত প্রচেষ্টা বাদে সেই দাবি এখনও হালে পানি পায়নি। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, এখানে পর্যটন শিল্পের বেড়ে ওঠার সম্ভাবনা ভরপুর। প্রায় এক বছর ধরে দু’টি জলপথ ভ্রমণ সংস্থার মাধ্যমে বিদেশি পর্যটকদের নিয়ে জাহাজ ভিড়ছে এখানে।

হোলির দিন একটি ভ্রমণ সংস্থার জাহাজে প্রায় পঞ্চাশ জন বিদেশি গুপ্তিপাড়ায় এসেছিলেন। সংস্থার আধিকারিকেরা জা‌নান, সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত ভ্রমণের বন্দোবস্ত থাকে। আট দিন জলপথে ভ্রমণ করানো হয় বিদেশিদের। কার্যত পাঁচতারা হোটেলের সুবিধাযুক্ত জাহাজ ছাড়ে হাওড়ার বটানিক্যাল গার্ডেন জেটি থেকে।

Advertisement

২০০৯ সাল থেকে শুরু হওয়া এই যাত্রায় পর্যটকদের কালনা, শান্তিপুর, ফুলিয়া, মায়াপুর, মাটিয়ারি, মুর্শিদাবাদ প্রভৃতি জায়গায় ভ্রমণ করানো হয়। হুগলির চন্দননগর বা শ্রীরামপুরেও কয়েক বার পর্যটকদের ঘোরানো হয়ছে। এক বছর আগে তালিকায় যুক্ত হয় গুপ্তিপাড়া।

এই জাহাজে করেই নিয়ে আসা হচ্ছে পর্যটকদের। নিজস্ব চিত্র

গুপ্তিপাড়ায় জাহাজ মাঝগঙ্গায় নোঙর করে। সুদৃশ্য ছোট নৌকায় পর্যটকদের পাড়ে আনা হয়। টোটোতে চেপে টেরাকোটার কাজ সমৃদ্ধ মন্দির, মঠ, রথ, দেশকালী মন্দির, বাংলার প্রথম বারোয়ারি বৃন্দবাসিনীতলা, মাসির বাড়ি ঘুরে দেখেন তাঁরা। বনেদি সেনবাটির বাগানবাড়িতে পুকুরপাড়ে মনোরম পরিবেশে খানিক জিরিয়েও নেন। কুমোরপাড়াতেও সময় কাটান। মাটির প্রদীপ, ছোটখাটো মূর্তি বা অন্যান্য জিনিস কেনেন বিদেশিরা।

বৃন্দাবনচন্দ্র মঠে রামসীতা মন্দিরের টেরাকোটার কাজ, কারুকার্য করা রথ, গাছগাছালির ছায়াঘেরা প্রকৃতি যে তাঁদের কাছে যথেষ্ট উপভোগ্য তা বোঝা গেল কানাডার রোনাল্ড জেকবসন বা আমেরিকার রোজ নেজ, মেরি হোয়াইটিংদের হাবভাব দেখেই।

ভ্রমণ সংস্থাটির জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন) পার্থ মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘জাহাজ থেকে নামার জন্য জেটি না-থাকায় পর্যটকদের অসুবিধা হয়। আর একটা সমস্যা শৌচাগার না থাকা। সংক্রমণ এবং নিরাপত্তার কথা ভেবে পথঘাটের শৌচাগার ব্যবহার করা যায় না। এ ক্ষেত্রে জাহাজই ভরসা। সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা কথা বলছি।’’

বিশ্বজিৎ নাগ, সুব্রত মণ্ডলের মতো গ্রামবাসীরা চান, পর্যটন দফতরের তরফে পরিকাঠামো আরও ঢে‌লে সাজা হোক। তা হলে বিদেশিরা আরও বেশি করে আকৃষ্ট হবেন। সঠিক ভাবে পরিকল্পন‌া রূপায়িত হলে গ্রামীণ এই এলাকার আর্থ-সামাজিক পরিকাঠামোও আমূল বদলে যাবে।

পার্থবাবু জানিয়েছেন, এই মরসুমের শেষ বারের যাত্রা হয়েছে শনিবার। গন্তব্যের তালিকায় ছিল গুপ্তিপাড়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন