Coronavirus Lockdown

ঝড়ের ছ’দিন পরেও গঙ্গাধরপুর অন্ধকারে

গত সপ্তাহের বুধবার রাতে জেলা জুড়ে তাণ্ডব চালায় আমপান। তার গ্রাস থেকে মুক্তি পায়নি গঙ্গাধরপুরও।

Advertisement

নুরুল আবসার

পাঁচলা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২০ ০২:৫৪
Share:

ভূপতিত: ঝড়ে উপড়ে গিয়েছে গাছ। ছিঁড়েছে বিদ্যুতের তার। নিজস্ব চিত্র

শহরের এত কাছে। তবুও যেন বিচ্ছিন্ন ‘দ্বীপ’ গঙ্গাধরপুর। চারদিকে গাছপালা পড়ে রয়েছে। কাটার লোক নেই। পুরো এলাকা বিদ্যুৎবিহীন। পানীয় জল নেই। সব মিলিয়ে পাঁচলা ব্লকের কয়েক হাজার মানুষ যেন ‘নেই রাজ্যের’ বাসিন্দা!

Advertisement

গত সপ্তাহের বুধবার রাতে জেলা জুড়ে তাণ্ডব চালায় আমপান। তার গ্রাস থেকে মুক্তি পায়নি গঙ্গাধরপুরও। ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া আমপান তছনছ করে দিয়েছে এই এলাকাকে। অংসখ্য গাছ পড়ে গিয়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত।

হাওড়া সদর থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরের এই এলাকায় ঝড়ের পরে ছ'দিন কেটে গেলেও শুরু হয়নি স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার কাজ। ফলে গ্রামের ভিতরে গাছ ভেঙে পড়ে আছে। বিদ্যুৎ নেই। বিদ্যুতের অভাবে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পাম্প হাউস অচল হয়ে আছে। যাঁদের বাড়িতে সাব মার্সিবল পাম্প আছে, সেগুলি অচল। ফলে জলসঙ্কট বাড়ছে।

Advertisement

গাছ পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গ্রামের বাজারে আনাজের গাড়ি ঢুকছে না। গ্রামবাসীরা সাইকেলে করে এই পঞ্চায়েত এলাকার বাইরে থেকে বাজার করে আনছেন। এমনকি কেউ অসুস্থ হলে রাস্তা বন্ধ হয়ে থাকায় অ্যাম্বুল্যান্সও ঢুকতে পারছে না।

পাম্প চালানোর জন্য যাঁরা জেনারেটর ভাড়া দিচ্ছেন, তাঁরা চড়া মূল্য হাঁকছেন। এই পঞ্চায়েতের গোন্দলপাড়ার বাসিন্দা অম্লান পাত্র বলেন, ‘‘কুড়ি মিনিটের জন্য জেনারেটর ভাড়া নিই। এর জন্য দিতে হয় দেড়শো টাকা। কী করে পারব!’’ গঙ্গাধরপুরের বাসিন্দা শিক্ষাবিদ সন্তোষ দাস বলেন, ‘‘ঘণ্টায় চারশো টাকা করে জেনারেটর ভাড়া নিয়ে আমরা বাড়ির জন্য জল তুলি। আমরা না হয় বাধ্য হয়ে হলেও ভাড়ার টাকা গুনতে পারছি। কিন্তু গ্রামের গরিব মানুষদের অবস্থা অবর্ণনীয়। ঘণ্টা পর ঘণ্টা তাঁদের নলকূপের সামনে জলের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে।’’

জেলার প্রায় সর্বত্র স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হলেও হাওড়া সদরের এত কাছের এই পঞ্চায়েত এলাকায় কেন তা হচ্ছে না সেই প্রশ্ন তোলেন এলাকার বাসিন্দারা।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ধীরে ধীরে সব জায়গার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে। অন্য দিকে গাছ না কাটা হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হবে না বলে বন্টন সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন