পঞ্চায়েতে ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’ তৈরিতে ফের নির্দেশ

জঞ্জাল বাড়ছে গ্রামীণ হাওড়ায়

পুজো শেষে বাগনান, আমতা, শ্যামপুর, উদয়নারায়ণপুর, জয়পুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় মুম্বই রোড-সহ বিভিন্ন রাস্তার ধারে এখনও ডাঁই হয়ে পড়ে রয়েছে থার্মোকলের থালা, বাটি, ডিমের খোলার মতো বর্জ্য।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৫৬
Share:

দূষণ: ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে আবর্জনার স্তূপ। বাগনানে। ছবি: সুব্রত জানা

নগরায়ণের জেরে গ্রামীণ হাওড়ায় জনবসতি বাড়ছে। তৈরি হচ্ছে বহুতল। একই সঙ্গে রাস্তাঘাটে বেড়ে চলেছে জঞ্জালের স্তূপও। ফলে, দূষণ নিয়ে প্রশ্নও সামনে চলে এসেছে।

Advertisement

পুজো শেষে বাগনান, আমতা, শ্যামপুর, উদয়নারায়ণপুর, জয়পুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় মুম্বই রোড-সহ বিভিন্ন রাস্তার ধারে এখনও ডাঁই হয়ে পড়ে রয়েছে থার্মোকলের থালা, বাটি, ডিমের খোলার মতো বর্জ্য। পুজোর সময়ে ওই সব রাস্তার ধারে খাবারের স্টল হয়েছিল। কিন্তু উচ্ছিষ্ট বা বর্জ্য পরিষ্কারের ব্যবস্থা হয়নি। কবে সেই ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে এ নিয়ে এলাকাবাসীরা চিন্তিত।

বাগনান থানা নাগরিক কমিটির পক্ষে প্রসূন রায়, বিভাস সামন্তদের ক্ষোভ, ‘‘জেলার বিভিন্ন এলাকায় দ্রুত নগরায়ণ হচ্ছে। অথচ পরিবেশ রক্ষা নিয়ে সরকারের তেমন কোনও উদ্যোগ নেই। পঞ্চায়েত সেই উদ্যোগ নিতে পারে।’’

Advertisement

সত্যি কি পঞ্চায়েত তা পারে?

সরকারি পরিসংখ্যানই বলছে, জেলার ১৫৭টি পঞ্চায়েতের মধ্যে মাত্র দু’টিতে (ডোমজুড় ব্লকের দক্ষিণ ঝাঁপরদহ এবং উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের রঘুদেবপুর) বর্জ্য ফেলা এবং তা পুনর্ব্যবহার প্রকল্প গড়া হয়েছে। বাকিগুলিতে তা না থাকায় রাস্তাই যেন ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’! কিন্তু পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, বছর পাঁচেক আগেই বিশ্বব্যাঙ্কের অধীন আইএসজিপি প্রকল্পে প্রতিটি পঞ্চায়েতে একটি করে ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’ তৈরির কথা বলা হয়। সেই খাতে টাকাও বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু পঞ্চায়েতগুলি এ ব্যাপারে উৎসাহী নয়। অনেক পঞ্চায়েতের কর্তাদের দাবি, জমি পাওয়াই কঠিন। সেই কারণে বর্জ্য তুলে ফেলা এবং তার পুনর্ব্যবহার প্রকল্পের কাজে খুব একটা অগ্রগতি ঘটানো যায়নি। তবে, নবনির্বাচিত পঞ্চায়েতগুলিকে এ ব্যাপারে জোর দিতে বলা হয়েছে বলে জেলা পরিষদ সূত্রের খবর।

জেলা পরিষদের এক কর্তা জানান, প্রথম পর্যায়ে শহরঘেঁষা পঞ্চায়েতে বর্জ্য ফেলার ডাম্পিং গ্রাউন্ড এবং বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের প্রকল্প নেওয়া হবে। তারপরে বাকি পঞ্চায়েতগুলিতে হাত দেওয়া হবে। আমতা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকান্ত পাল বলেন, ‘‘আমরা শীঘ্রই কয়েকটি পঞ্চায়েতে ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরিতে উদ্যোগী হব। সমীক্ষার কাজ শুরু হবে।’’ উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক পুলক রায় বলেন, ‘‘আমার এল‌াকায় বেশিরভাগ পঞ্চায়েত শহরঘেঁষা। সেইসব এলাকায় ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির ব্যাপারে পঞ্চায়েতগুলিকে উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে।’’

শুধু পুজোর সময়েই নয়, বিয়ের মরসুমেও নানা এলাকায় জঞ্জাল জমে। বিশেষ করে অনুষ্ঠান-বাড়ির পাশে। বাগনান, আমতা, জয়পুর, শ্যামপুর প্রভৃতি এলাকায় বাড়ির বর্জ্য ফেলা হয় রাস্তার ধারে বা পুকুর পাড়ে। এই সব জায়গায় বহু আবাসন গড়ে উঠেছে। সেইসব আবাসনের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে রাস্তার ধারে বা পুকুর পাড়ে। নাকে রুমাল চাপা দিয়ে যাতায়াত করতে দেখা যায় পথচারীদের।

এই দূষণ বা দুর্গন্ধ থেকে রেহাই চান সাধারণ মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন