হাওড়ায় দুই বধূর মৃত্যুতে মূল অভিযুক্তরা অধরাই, ক্ষোভ

গ্যাসস্টোভে ঠেসে ধরে মেয়েকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ

শ্যামপুরের ডিহিমণ্ডলঘাটে অগ্নিদগ্ধ বধূর মৃত্যুতে খুনের অভিযোগ দায়েরের পরে তিন দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্তদের একজনকে এখনও গ্রেফতার করতে না পারায় মৃতের বাপের বাড়ির লোকজন পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্যামপুর শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৪৫
Share:

শোকার্ত মাকে সান্ত্বনা আত্মীয়স্বজনের। ইনসেটে, সর্বাণী মাইতি। নিজস্ব চিত্র।

শ্যামপুরের ডিহিমণ্ডলঘাটে অগ্নিদগ্ধ বধূর মৃত্যুতে খুনের অভিযোগ দায়েরের পরে তিন দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্তদের একজনকে এখনও গ্রেফতার করতে না পারায় মৃতের বাপের বাড়ির লোকজন পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ।

Advertisement

সর্বাণী মাইতি নামে ওই গৃহবধূকে সোমবার রাতে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হালপাতালে মারা যান। বধূর বাপের বাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মহিলার স্বামী তপন মাইতি, শ্বশুর সুবল মাইতি, শাশুড়ি গীতা মাইতি ও ননদ অপর্ণা মাইতিকে মঙ্গলবারই গ্রেফতার করে। যদিও অভিযুক্ত আর এক জন বধূর ভাসুর স্বপন মাইতি পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে।

হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, সর্বাণীদেবীর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত করা হচ্ছে। বাকি অভিযুক্তকেও ধরার চেষ্টা চলছে।

Advertisement

বুধবার শ্যামপুরের বারগ্রামে সবার্ণীদেবীর বাপেরবাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, মেয়ের শোকে কেঁদে চলেছেন মা। তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন আত্মীয়রা। বাবা ভানু দাস বলেন, ‘‘কালীপুজো দেখে আমার মেয়ের বাপের বাড়ি আসার কথা ছিল। তাই নিয়েই শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের সঙ্গে ওর ঝামেলা বাধে। ও যখন রান্না করছিল সেই সময় শ্বশুরবাড়ির সবাই ওকে গ্যাসের উনুনের সঙ্গে ঠেসে ধরে পুড়িয়ে মারে। মেয়ের গায়ে কেরোসিনও ঢেলে দেয়।’’

পেশায় চাষি ভানুবাবু বলেন, ‘‘ধার দেনা করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন তিন বছর আগে। বিয়ের তিন বছর কেটে গেলেও সন্তান না হওয়ায় মেয়েকে গঞ্জনা দেওয়া হতো। এমনকী তার উপর নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করা হতো। মেরে ফেলারও হুমকি দিত ওরা। ভয়ে মেয়ে প্রায়ই বাপেরবাড়িতে চলে আসত। দুর্গাপুজোর আগে স্বামীর সঙ্গে শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যায়। সন্তান না হওয়ার জন্য মেয়ে ডাক্তারও দেখাচ্ছিল। কিন্তু ওরা যে মেয়েটাকে মেরে ফেলবে ভাবতে পারিনি।’’

মেয়ের অগ্নিদগ্ধ হওয়ার খরব পেয়েই রাতে শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে যান সর্বাণীদেবীর বাপের বাড়ির লোকজন। অন্যদিকে এদিনই ডিহিমণ্ডলঘাটে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দেখা গেল বাড়িতে তালা ঝুলছে। প্রতিবেশীরা কেউ বলতে চাইলেন না। তবে পরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাসিন্দা জানান, প্রায়ই এই পরিবারে অশান্তি হতো। ঘটনার দিন চেঁচামেচিও শুনেছিলেন তাঁরা। পরে এসে দেখেন অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় সর্বাণীদেবীকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন