ক্ষোভ শ্রীরামপুরের স্কুলের অভিভাবকদের

ঘর কম, প্রশ্নের মুখে ছাত্রী বাতিল প্রক্রিয়া

বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রাথমিক বিভাগের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের একাংশ বুধবার স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখান। প্রাথমিক বিভাগের তরফে লিখিত ভাবে বিষয়টি জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে (প্রাথমিক) জানানো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৪১
Share:

প্রতিবাদ: রাস্তা আটকে বিক্ষোভ অভিভাবকদের। নিজস্ব চিত্র

একই চৌহদ্দিতে উচ্চ মাধ্যমিকের পাশাপাশি প্রাথমিক বিভাগও চ‌লে। স্কুল ভবনের মালিকানা রয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে। তারা প্রাথমিকের শ্রেণিকক্ষ কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আতান্তরে পড়েছে ওই বিভাগ। ঘটনাটি শ্রীরামপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের (আখনা গার্লস)।

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রাথমিক বিভাগের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের একাংশ বুধবার স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখান। প্রাথমিক বিভাগের তরফে লিখিত ভাবে বিষয়টি জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে (প্রাথমিক) জানানো হয়েছে।

সূত্রের খবর, হুগলির এই স্কুলে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। স্কুল ভবনে এ, বি এবং সি— তিনটি ব্লক রয়েছে। ‘এ’ ব্লকে প্রাথমিক বিভাগ চলে। ওই বিভাগের কর্তৃপক্ষ জানান, গত জুলাই মাসে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তরফে চিঠি দিয়ে তাঁদের জানানো হয়, আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকে মাত্র ৫টি ঘর তাঁদের ব্যবহার করতে দেওয়া হবে। শৌচাগারও তিনটির বেশি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।

Advertisement

ওই সিদ্ধান্তের কথা জেনে ফাঁপড়ে পড়েছে প্রাথমিক বিভাগ। টিচার ইন-চার্জ বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য জানান, প্রাক প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ২৯১ জন ছাত্রী রয়েছে। ‘এ’ ব্লকের ১২টি ঘর তাঁরা ব্যবহার করেন। মাত্র ৫টি ঘর বরাদ্দ হলে এত পড়ুয়াকে পড়ানো অসম্ভব। টিচার ইন-চার্জের কথায়, ‘‘শ্রেণিকক্ষ পিছু গড়ে ৩৫ জন পড়ুয়া বসতে পারে। তার মানে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে ১৭৫ জনের বেশি পড়ানো যাবে না।’’ তাহলে কী ভিত্তিতে ওই বাকি পড়ুয়াদের বাদ দেওয়া হবে, উঠছে প্রশ্ন।

এই প্রশ্নেই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পড়ুয়াদের অভিভাবকরা। তাঁদের বক্তব্য, এমন পরিস্থিতি হলে মাঝপথে অন্য কোথাও মেয়েদের ভর্তি করাতে সমস্যায় পড়তে হবে। এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘প্রাথমিক বিভাগ থেকে মেয়েরা সরাসরি হাইস্কুলে ভর্তি হতে পারে। সেই নিশ্চয়তা থেকেই মেয়েকে এখানে ভর্তি করেছি। মাঝপথে বিনা কারণে অন্য স্কুলে পাঠিয়ে দেওয়া হলে আমরা কেন যাব?’’ তাঁদের বক্তব্য, প্রাথমিক বিভাগ সাড়ে ১০টায় ছুটি হয়ে যায়। তার পরে উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগ শুরু হয়। সে ক্ষেত্রে ওই ব্লকের সবক’টি ঘর ব্যবহার করতে দিলে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা ন‌য়।

এ দিন স্কুলের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রাথমিকের পড়ুয়াদের অভিবাবকরা। তাঁদের অভিযোগ, ‘এ’ ব্লকে ন’টি শৌচাগার রয়েছে। সম্প্রতি সাতটি শৌচাগারে তালা ঝু‌লিয়ে দেওয়া হয়েছে। ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা জানিয়ে দেন, সমস্যার সমাধান না হলে তাঁরা শিক্ষামন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী— সকলেরই দ্বারস্থ হবেন।

উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যা‌লয় সূত্রের খবর, গত এপ্রিল মাসে বিদ্যা‌লয়ের পরিচালন সমিতির বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, প্রাথমিক বিভাগকে পাঁচটি ঘর এবং তিনটি শৌচাগার ব্যবহার করতে দেওয়া হবে। কী কারণে তা করা হল, তার ব্যাখ্যা মেলেনি। উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগের টিচার ইন-চার্জ সর্বাণী মুখোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমে মন্তব্য করতে চাননি। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) গোপাল বিশ্বাস বলেন, ‘‘কোনও পড়ুয়ার যাতে সমস্যা না হয়, তা দেখতে হবে। সেকেন্ডারি বিভাগের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দফতরের মাধ্যমে শুনানি করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন