শয্যাশায়ী: হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবাসিকরা। নিজস্ব চিত্র
এক সঙ্গে পাঁচ আবাসিকের মৃত্যুতে এ বার প্রশ্নের সামনে উত্তরপাড়ার ভবঘুরে মহিলাদের সরকারি হোম।
এর আগে হুগলির ধনেখালিতে একটি বেসরকারি হোমের আবাসিক মহিলাদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছিল। এক মহিলা আবাসিকের মৃত্যুতে সেই সময় বিষয়টি সামনে আসে। অবশ্য উত্তরপাড়ার ক্ষেত্রে মহিলাদের মৃত্যুর কারণ ভিন্ন। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকদের অনুমান, বিষক্রিয়ার জেরেই মৃত্যু হয়েছে পাঁচ আবাসিকের।
বহু সময় রাস্তায় অনেক মহিলাকেই দেখতে পাওয়া যায় যাঁদের কোনও নির্দিষ্ট ঠিকানা নেই। যাঁরা অনেক সময় বলতেও পারেন না তাঁদের ঠিকানা। অনেকেই শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ। আবার অনেক মহিলা ট্রেন পথে হারিয়েও যান। এই সমস্ত মহিলাদেরই উত্তরপাড়ার ওই হোমে ঠাঁই হয়।
বহু সময় হোমের কর্মীরা নানা পুলিশ ও প্রশাসনিক স্তরে যোগাযোগ করে ওইসব মহিলাদের বাড়িতে ফিরিয়ে দেন। আবার এমনও দেখা যায়, যাঁদের বহু চেষ্টার পরও ফেরানো যাচ্ছে না। ফলে তাঁরা কার্যত হোমেরই স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যান।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন দু’য়েক আগে উত্তরপাড়া জেনারেল হাসপাতালে উত্তরপাড়া হোেমর তিন আবাসিককে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে আসার আগেই তাঁদের মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার মৃত ওই দুই মহিলার নাম মুন্নু মান্ডি (২৮) এবং নীল মাধব (৫০) নামে আরও দু’জনের। উত্তরপাড়ায় এক সঙ্গে মোট ১৩ জন অসুস্থ ও তাঁদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যুতে সেখানের খাদ্যের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। উত্তরপাড়া হাসপাতালের সুপার দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঠিক কী কারণে ওঁদের এমন শারীরিক পরিস্থিতি হল, তা জানতে মল পরীক্ষার পাশাপাশি তাঁরা যে খাবার খেয়েছিলেন তারও পরীক্ষা জরুরি।’’
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কেন ওই সরকারি হোমের একসঙ্গে অত আবাসিক অসুস্থ হয়ে পড়লেন ও মারা গেলেন সেই নিয়ে সরকারি স্তরে তদন্ত শুরু হয়েছে। কোথাও গাফিলতির প্রমাণ পেলে প্রশাসনিক স্তরে ব্যবস্থা নেওয়া হবেও বলে জানানো হয়েছে।
এ দিন হোমে মৃতদের সুরতাহাল হয়েছে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে। হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত পর্যন্ত পুরোটাই ভিডিও রেকডিং করা হয়। কী কারণে এমন ঘটনা, তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে প্রশাসন। নারী ও সমাজ কল্যাণ দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী শশী পাঁজাকে এ দিন ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।