বৃদ্ধার ‘ছিনতাই’ হওয়া জমি ফেরাতে নির্দেশ 

দ্রৌপদী দেবী নামে ওই বৃদ্ধার আদত বাড়ি বিহারের লক্ষ্মীসরাইয়ে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই তিনি হাওড়ার বেলুড়ের একটি ভাড়াবাড়িতে একাই থাকেন। বছর চারেক আগে তাঁর স্বামী মারা গিয়েছেন। দুই ছেলে বেলুড়েই অন্যত্র ভাড়া থাকেন।

Advertisement

শমীক ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৬:১২
Share:

ফাইল চিত্র

নথি জাল করে অশীতিপর এক বৃদ্ধার জমিতে চারতলা ফ্ল্যাটবাড়ি তৈরি করে ফেলেছিলেন এক প্রোমোটার। জমি ফিরে পেতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই বৃদ্ধা। মঙ্গলবার বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত প্রধানকে নির্দেশ দিয়েছেন, অবিলম্বে ওই বাড়ি ভেঙে বৃদ্ধাকে তাঁর জমি ফিরিয়ে দিতে হবে।

Advertisement

দ্রৌপদী দেবী নামে ওই বৃদ্ধার আদত বাড়ি বিহারের লক্ষ্মীসরাইয়ে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই তিনি হাওড়ার বেলুড়ের একটি ভাড়াবাড়িতে একাই থাকেন। বছর চারেক আগে তাঁর স্বামী মারা গিয়েছেন। দুই ছেলে বেলুড়েই অন্যত্র ভাড়া থাকেন।

দ্রৌপদী দেবীর আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী জানান, ২০১১ সালে সোনারপুরের খেদিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের আটঘরা এলাকায় তিন কাঠা জমি কেনেন তাঁর মক্কেল। তাঁর কয়েক জন আত্মীয় ওই এলাকায় থাকেন। বৃদ্ধা ভেবেছিলেন, সময় মতো ওই জমিতে বাড়ি করে বসবাস করবেন। ২০১৮ সালে সেখানকার আত্মীয়েরা তাঁকে জানান, ওই জমিতে কোনও এক প্রোমোটার ফ্ল্যাটবাড়ি তৈরি করতে শুরু করেছেন।

Advertisement

খবর জেনেই দেরি না করে খেদিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত, সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ার ও সোনারপুর থানায় অভিযোগ জানান ওই বৃদ্ধা। আশিসবাবু জানান, এত জায়গায় অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও নির্মাণ বন্ধ হয়নি বলে তাঁর মক্কেলের অভিযোগ।

প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়ায় গত এপ্রিল মাসে পুনরায় সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে চি‌ঠি দিয়ে অভিযোগ জানান দ্রৌপদী দেবী। অভিযোগ জানানো হয় সোনারপুরের বিডিও-র কাছেও। সেই অভিযোগে জানানো হয়, প্রোমোটার দলিল ও অন্য সমস্ত নথি জাল করে নিজের নামে জমির মালিকানা বদলে নিয়েছেন। এমনকি, কয়েকটি ফ্ল্যাট বিক্রিও করে দিয়েছেন।

আশিসবাবু জানান, সেই অভিযোগ পেয়েও প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়ায় হাইকোর্টে মামলা করা হয়। মামলার আবেদনে বলা হয়, আশি বছরের এক বৃদ্ধার জমি দখল করে তাঁর মাথা গোঁজার সম্বলটুকু কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আদালত হস্তক্ষেপ না করলে তিনি সংবিধান-স্বীকৃত মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন।

এ দিন মামলার শুনানিতে বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়কে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের আইনজীবী তাপস মণ্ডল জানান, ওই জমিতে যে নির্মাণ হচ্ছে, তা পুরোপুরি বেআইনি। সাড়ে ছয় মিটারের বেশি উঁচু ওই নির্মাণের অনুমতি জেলা পরিষদ দেয়নি। আশিসবাবু জানান, এ দিন প্রোমোটারের আইনজীবী আদালতে এমন কোনও নথি দেখাতে পারেননি, যা প্রমাণ করে ওই জমি প্রোমোটারের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন