‘রিসোলিং’ টায়ার, অকেজো দরজা-জানলা

লজ্‌ঝড়ে গাড়ি, ছুটছে পুলিশ

চোর-ডাকাতের পিছনে দৌড় আছে, ভিআইপি-দের নিরাপত্তা দেওয়া আছে, রয়েছে আরও অনেক কাজ। কিন্তু পুলিশের সম্বল শুধু লজ্‌ঝড়ে কিছু গাড়ি!

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৫০
Share:

চলছে মেরামতি। নিজস্ব চিত্র

চোর-ডাকাতের পিছনে দৌড় আছে, ভিআইপি-দের নিরাপত্তা দেওয়া আছে, রয়েছে আরও অনেক কাজ। কিন্তু পুলিশের সম্বল শুধু লজ্‌ঝড়ে কিছু গাড়ি!

Advertisement

হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় ১২টি থানা, তিনটি তদন্তকেন্দ্র, তিনটি ফাঁড়ি, চারটি ট্র্যাফিক গার্ড এবং জেলা পুলিশের সদর দফতর— সর্বত্রই সাধারণ পুলিশকর্মীদের যাতায়াতের গাড়ির অবস্থা তথৈবচ! বেশির ভাগ গাড়িরই টায়ার ‘রিসোল’ করা। জানলার কাচ ওঠালে নামানো যায় না। দরজা বন্ধ করা হলে খুলতে চায় না। গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তার ক্ষোভ, ‘‘আমরা মাঝেমধ্যেই রাস্তায় গাড়ি ধরে পরীক্ষা করি। কিন্তু তখন যদি কেউ পুলিশের গাড়িকেই চ্যালেঞ্জ করে বসেন, তখন লজ্জায় মাথা নিচু করে নিতে হবে। ওই গাড়ি নিয়েই দুষ্কৃতী ধরতে যেতে হয়। প্রতি পদে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।’’

চড়ুইভাতির মরসুম শুরু হয়েছে। শ্যামপুরের গড়চুমুক পর্যটনকেন্দ্রে একটি পুলিশ ফাঁড়ি আছে। লজঝরে সরকারি গাড়ি নিয়েই পুলিশকে নজরদারি চালাতে হবে পর্যটকদের উপরে। সেই সমস্যার কথা সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে জানিয়েছিলেন গ্রামীণ জেলা পুলিশ কর্তারা। থানা এবং জেলা পুলিশের সদর দফতর মিলিয়ে বেশির ভাগ গাড়িই যে বাতিলের তালিকায় পড়ে, সে কথা স্বীকার করেন গ্রামীণ জেলা পুলিশের কর্তাদের একাংশ।

Advertisement

তা হলে ওই গাড়িগুলিকে বাতিল ঘোষণা করা হচ্ছে না কেন?

জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘এমনিতে সরকারি গাড়ি কম। তার উপরে বাতিল ঘোষণা করে দিলে নতুন বরাদ্দ কবে আসবে তার ঠিক নেই। ফলে, কার্যত ভাঙাচোরা গাড়ি নিয়েই কাজ চালাতে হয়। অনেক সময় এমনও হয় যে, চলতে চলতে আচমকা থেমে যায় গাড়ি। তখন কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের সেই গাড়ি ঠেলে ফের ‘স্টার্ট’ করাতে হয়।’’

জেলা পুলিশ সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, গাড়ি মেরামতির জন্য রাজ্য পুলিশের সদর দফতর

থেকে নির্দেশ এসেছে। (গ্রামীণ) জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, প্রথম পর্যায়ে সব সরকারি গাড়ির টায়ার বদলানোর জন্য টাকা এসে গিয়েছে। তারপর মেরামতির বরাদ্দ আসার কথা।

ঝাঁ-চকচকে ভাল গাড়িগুলি বরাদ্দ ওসি, আইসি বা আরও ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের জন্য। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেই সব গাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়। কোনও অভিযানে সাধারণ পুলিশকর্মীরা সেই গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন না। তাঁদের জন্য বরাদ্দ সরকারি গাড়ি। পুলিশকর্তাদের একাংশ অবশ্য গাড়িগুলির বেহাল দশার জন্য থানাগুলির উপরে দোষ দেন। ওই কর্তার কথায়, ‘‘গাড়িগুলি ঠিকমতে যত্ন করা হয় না।’’ অন্যদিকে থানাগুলি থেকে পাল্টা জানানো হয়েছে, কাজ বেশি। গাড়ি কম। ফলে, গাড়ির যত্ন করার ন্যূনতম সময়

মেলে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন