যুবককে বেধড়ক মারধর, ফের অভিযুক্ত প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বামী বড়ে

গত ডিসেম্বরে চওড়া বস্তি এলাকায় স্থানীয় এক কংগ্রেস নেতার বাড়িতে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডেরই তৃণমূল সভাপতি বড়ের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাওড়া শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৯ ০০:৩৬
Share:

প্রহৃত ইমামউদ্দিন কাসমি।

তার বিরুদ্ধে থানায় ভাঙচুর ও এলাকায় গুলি চালানোর অভিযোগ ছিলই। সেই অভিযোগে জেলও খেটেছিল সে। সদ্য ছাড়া পেয়েছে। তার পরেই ফের এক যুবককে মারধরের অভিযোগ উঠল হাওড়ার ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর শামিমা বেগমের স্বামী শামিম আহমেদ ওরফে বড়ের বিরুদ্ধে। স্থানীয় এক ক্লাবে আশ্রয় নেওয়া এক বৃদ্ধ দম্পতিকে সেখান থেকে উঠে যেতে বলেন ওই যুবক। সেই অভিযোগে বড়ের রোষে পড়েন তিনি। অভিযোগ, ইমামউদ্দিন কাসমি নামে ওই যুবককে সোমবার রাতে মারধর করে বড়ে ও তার সঙ্গীরা। শিবপুর থানা এলাকার হেমচন্দ্র বসু লেনের ঘটনা। গুরুতর আহত ইমামউদ্দিনকে হাওড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যদিও অভিযোগ মানতেই চায়নি অভিযুক্ত।

Advertisement

গত ডিসেম্বরে চওড়া বস্তি এলাকায় স্থানীয় এক কংগ্রেস নেতার বাড়িতে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডেরই তৃণমূল সভাপতি বড়ের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনা ঘিরে দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজি হয়। ঘটনার পরে থানায় ভাঙচুর ও গোলমালের অভিযোগে বড়েকে গ্রেফতার করা হয়। পরে অবশ্য জামিন পায় সে।

সোমবার কী ঘটে? পুলিশ সূত্রের খবর, শিবপুরের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোষবাগান এলাকায় স্থানীয় একটি ক্লাব সংলগ্ন জমিতে প্রোমোটিংয়ের কাজ চলছে। সে কারণে ওই জমিতে বসবাসকারী এক বৃদ্ধ দম্পতিকে অস্থায়ী ভাবে ক্লাবে থাকতে দিয়েছিল বড়ে। সে দম্পতিকে আশ্বাস দিয়েছিল, কাজ শেষ হলে তাঁরা একটি ফ্ল্যাট পাবেন। অন্য দিকে, ওই ক্লাবেই কয়েক বছর ধরে এলাকার দুঃস্থ বাচ্চাদের বিনা বেতনে পড়াচ্ছেন ইমামউদ্দিন। অভিযোগ, সোমবার তিনি ওই দম্পতিকে ক্লাব ছেড়ে দিতে বলেন। তা নিয়ে দু’পক্ষের বচসা হয়। কিছু পরে রাত ১০টা নাগাদ ইমামউদ্দিন যখন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন বড়ের নেতৃত্বে ৬-৭ জন তাঁকে লাঠি ও রড নিয়ে আক্রমণ করে বলে অভিযোগ। ওই যুবককে রাস্তায় ফেলে পেটানো হয়।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ইমামউদ্দিনের ভাই বদরুদ্দিন কাসমি বলেন, ‘‘ছুটে এসে দেখি, বড়ে ও তার সঙ্গীরা দাদাকে রাস্তায় ফেলে মারছে। রক্তাক্ত অবস্থায় চিৎকার করছে দাদা।’’ বদরুদ্দিনই দাদাকে নিয়ে শিবপুর থানায় যান। তাঁর অভিযোগ, সেখানেও বড়ে পৌঁছে শাসানি দেয়। পরে থানা থেকে ইমামউদ্দিনকে হাওড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়। আরও অভিযোগ, থানার সামনে গিয়ে বড়ে ‘দাদাগিরি’ করলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। বরং প্রথমে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। শেষে মঙ্গলবার তারা অভিযোগ নেয়। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে বড়ে বলে, ‘‘আমরা কেন ছেলেটিকে মারধর করব? ও নিজেই দেওয়ালে ঠুকে মুখ ফাটিয়েছে।’’

বড়ে।

গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে হাওড়া সিটি পুলিশের এসিপি (দক্ষিণ) গুলাম সারোয়ার বলেন, ‘‘থানা অভিযোগ নিতে চায়নি, সে কথা ঠিক নয়। থানা থেকে আহত যুবককে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। মঙ্গলবার অভিযোগ নেওয়া হয়েছে এবং নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।”

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন