প্রবেশ: সবুজ দ্বীপের লঞ্চ ঘাট। নিজস্ব চিত্র
মাঝগঙ্গায় গজিয়ে ওঠা দ্বীপে বার বা মদের দোকান কিছুই নেই। কিন্তু তাতেও কুছ পরোয়া নেহি! একটু আড়াল খুঁজে চোখের ইশারাতেই স্কুল-ব্যাগ থেকে বেরিয়ে আসছে মদের বোতল।
এই ছবি হুগলির বলাগড়ের সোমরা ২ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সবুজদ্বীপের। এই জায়গাটিকে পর্যটন মানচিত্রে তুলে ধরতে উদ্যোগী হয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। গাছগাছালিতে ঘেরা এই জায়গায় শীতকাল জুড়ে বহু মানুষ ভিড় জমান। জায়গাটি ঢেলে সাজানোর জন্য বছর দুয়েক ধরে এখানে চড়ুইভাতি বন্ধ ছিল। এ বার অবশ্য সেই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এখানে পিকনিকে আসা মানুষের সংখ্যা আগের থেকে কমেছে। নতুন করে পার্ক সাজলে হয়তো মানুষের ঢল বাড়বে।’’
সবুজদ্বীপে পৌঁছতে ভরসা ভুটভুটি বা নৌকো। নৌকোয় মাথাপিছু ৫০ টাকা ভাড়া গুনতে হচ্ছে। ছোট নৌকোতেও ঠাসাঠাসি করে লোক তুলে পারাপার চলছে। দ্বীপে যাওয়ার বাঁধানো ঘাট এখনও চালু হয়নি। যাত্রীদের চাপে যেকোনও সময়ে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। তবে সবটাই ঘটছে পুলিশের চোখের সামনে। গণেশ নস্কর নামে এক মাঝির সাফাই, ‘‘রোজ তো এত ভিড় হয় না। মানুষজন পাড়ে অপেক্ষা করতে চান না। সেই কারণেই একটু বেশি লোক নিয়ে যেতে হয়।’’
পার্কে থাকার সময়ে সকাল সাতটা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশও মানা হয় না। চড়ুইভাতি করতে আসা লোকজন দিব্যি সন্ধ্যা পর্যন্ত থেকে যান। পার্কের ভিতরে বিভিন্ন জায়গায় ঝোপজঙ্গল হয়ে রয়েছে। সেখানে গিয়ে দেখা গিয়েছে, ইতিউতি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে জলের বোতল, প্লাস্টিকের প্যাকেট। পরিচ্ছন্নতার বালাই নেই। নৌকোয় ওঠার সময় বা নামার পরে, এমনকী পার্কের ভিতরেও লুকিয়েচুরিয়ে মদ বিক্রি চলছে। বোতলপিছু ৩০-৪০ টাকা বেশি দিলেই হল। মদ্যপানের অনুষঙ্গ হিসেবে পানীয় জল থেকে চানাচুর, বাদাম— মিলছে সবই। বিকোচ্ছে পান, বিড়ি, সিগারেট, গুটখা। পার্কের লোকজন অবশ্য এই নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তবে তাঁদের দাবি, প্রতিদিন পার্ক সাফাই করা হয়। পর্যটকদের ব্যবহার করা থালা-গ্লাস বা প্লাস্টিকের প্যাকেট সবই সরিয়ে ফেলা হয়।
পার্কের নিরাপত্তারক্ষীরা অবশ্য ভিতরের ছবি তুলতে তুলতে দিতে চাননি নিরাপত্তারক্ষীরা। পার্কের কর্তৃপক্ষের দাবি, সবুজদ্বীপের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। পর্যটনকেন্দ্রটি পুরোদমে চালু হলে কোনও সমস্যা থাকবে না। পার্কের ভিতরে রেস্টুরেন্ট চালান বন্দনা সোম নামে এক মহিলা।