ধরপাকড়: তেলেনিপাড়ায় পুলিশি তৎপরতা। নিজস্ব চিত্র
বাড়িতে রীতিমতো বোমা তৈরির কারখানা ফেঁদে বসেছিল ভদ্রেশ্বরের সঞ্জয় খান। সেই বোমা মোটা দামে সরবরাহও হতো দূর-দূরান্তে— পুলিশের কাছে এমনই খবর ছিল। শুক্রবার দুপুরে পুলিশ সঞ্জয়ের ডেরায় হানা দিতেই মৌচাকে ঢিল পড়ল!
ওই দুষ্কৃতীকে পুলিশ ধরতে পারেনি। সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও তার দলবল পুলিশকে লক্ষ করে ইট ছোড়ে। তেলেনিপাড়া ফাঁড়িতে চড়াও হয়। তবে, এই হামলায় কোনও পুলিশকর্মী জখম হননি। চন্দননগরের এসডিপিও রানা মুখোপাধ্যায় বাহিনী নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি
সামলান।
কে এই সঞ্জয়?
পুলিশ জানায়, ভদ্রেশ্বর সেগুনবাগান এলাকার দুষ্কৃতী সঞ্জয়। বোমা তৈরি করে ভদ্রেশ্বরের তেলেনিপাড়া, বাঁশবেড়িয়া-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকা তো বটেই, উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুর, ভাটপাড়া, জগদ্দলের নানা এলাকাতেও সে বোমা বিক্রি করত চড়া দামে। দীর্ঘদিনেই পুলিশ তার নাগাল পেতে চাইছিল। কিন্তু টিকি ছুঁতে পারছিল না। এ দিন পুলিশ খবর পায় সঞ্জয় বাড়ি ঢুকেছে। মোটরবাইকে চড়ে পুলিশ হানা দেয়। তা দেখেই সঞ্জয় তার স্ত্রী এবং বাড়ির অন্য মহিলাদের এগিয়ে দিয়ে নিজে পালায়। মহিলাদের প্রতিরোধে পুলিশ প্রথমে বিভ্রান্ত হয়। পুলিশের মোটরবাইক লক্ষ করে সঞ্জয়ের দলবল ইট ছোড়ে। পুলিশ প্রাথমিক ভাবে পিছু হটে।
তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা জানান, সঞ্জয়ের ‘ডান হাত’ শেখ মোক্কারাম নামে আর এক দুষ্কৃতী। তাকে সঙ্গে নিয়েই সে বিভিন্ন এলাকায় বোমা সরবরাহের ব্যবসা জাঁকিয়ে চালাচ্ছে। মোক্কারামেরও খোঁজ চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ভদ্রেশ্বর, মগরা-সহ হুগলির কয়েকটি থানায় অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। মাস কয়েক আগে চন্দননগরের উর্দিবাজারে দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালায়। সঞ্জয় সেই গণ্ডগোলেরও অন্যতম মাথা বলে পুলিশের দাবি। কিছুদিন আগেই বাঁশবেড়িয়ায় লুটপাটেও নাম জড়িয়েছিল সঞ্জয় ও মোক্কারামের।
এ দিন পুলিশকর্মীরা অবশ্য তেলেনিপাড়া ফাঁড়িতে সঞ্জয়ের দলবলের হামলা সামাল দিয়েছেন। কিন্তু পুরভোটের আগে শাসকদলের এক কাউন্সিলরের দলবলের হামলা তাঁরা সামলাতে পারেননি।