জোড়া লাগেনি সেতু, যান নিয়ন্ত্রণ ঈশ্বরগুপ্ততেও

হুগলিতে যানজট সঙ্গী, ভোগান্তি যাত্রীদের

বছর দু’য়েক আগে রেল কর্তৃপক্ষ কামারকুণ্ডু লেভেল ক্রসিংয়ে যানজট কমাতে উড়ালপুল তৈরির পরিকল্পনা করে। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের অদূরে তারকেশ্বর-বৈদ্যবাটি রোডের উপরে ওই লেভেল ক্রসিং।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

কামারকুণ্ডু শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:১৪
Share:

জটিল: উত্তরপাড়া জিটি রোডে যানজটের নিত্যদিনের ছবিটা এমনই। ছবি: দীপঙ্কর দে

রেল লাইনের উপরে হুগলিতে পর পর তিনটি উড়ালপুল জোড়ার কাজ বাকি পড়ে রয়েছে। দিল্লি রোডের একাংশে সম্প্রসারণের কাজ চলছে। অন্য দিকে বাঁশবেড়িয়া ঈশ্বরগুপ্ত সেতু দিয়ে ভারী যান চলাচল দীর্ঘ দিন বন্ধ। সব মিলিয়ে সন্ধ্যা নামলেই যানজটে স্তব্ধ হয়ে যায় হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকা।

Advertisement

বছর দু’য়েক আগে রেল কর্তৃপক্ষ কামারকুণ্ডু লেভেল ক্রসিংয়ে যানজট কমাতে উড়ালপুল তৈরির পরিকল্পনা করে। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের অদূরে তারকেশ্বর-বৈদ্যবাটি রোডের উপরে ওই লেভেল ক্রসিং। হাওড়া ও শিয়ালদহের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দূরপাল্লার ট্রেন কর্ড শাখা দিয়ে যাতায়াত করে। ফলে লেভেল ক্রসিং বন্ধ রাখতে হয় অনেকটা সময় ধরে। তখন গাড়ির যানজট এক্সপ্রেসওয়ে পর্যন্ত চলে আসে।

ওই রাস্তার উপরেই নালিকুল স্টেশনে রেলের আরও একটি উড়ালপুল তৈরি হচ্ছে। তারকেশ্বর শাখার ওই লেভেল ক্রসিংয়ের উড়ালপুল জোড়ার কাজ এখনও বাকি। সেখানে আবার সমস্যা অন্য। ওই লেভেল ক্রসিংয়ের কাছে একাধিক হিমঘর রয়েছে। আলুর মরসুমে শ’য়ে শ’য়ে ট্রাক আলু রাখতে আসে। লেভেল ক্রসিং বন্ধ থাকলে আলুর মরসুমে ওই রাস্তায় তীব্র যানজট হয়। কামারকুণ্ডু এবং নালিকুলে মানুষের সুরাহার জন্য যে উড়ালপুল তৈরি চলছে, সেগুলির কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা।

Advertisement

এ দিকে, ডানকুনি থেকে চন্দননগর পর্যন্ত দিল্লি রোডের একাংশে এখন সম্প্রসারণের কাজ চলছে। ওই রাস্তার উপরে হাওড়া-তারকেশ্বর শাখায় রেল লাইনের উপরে শেওড়াফুলির অদূরে নতুন একটি রেলসেতু তৈরি চলছে। কিন্তু ওই রেলসেতুর সংযুক্তির কাজও এখনও শেষ হয়নি। পাশে রেলের পুরনো সেতুটি দুর্বল হয়ে পড়ায় ওই রাস্তা দিয়েও দীর্ঘ দিন ধরে ভারী যান চলাচল বন্ধ।

আবার ঈশ্বরগুপ্ত সেতুও স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়ায় সেখানে ভারী যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। প্রায় এক বছর ধরে ওই সেতু দিয়ে ভারী যান চলাচল বন্ধ। হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা এবং নদিয়ার সংযোজক এই সেতু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন দু’পারের মানুষ। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় অনেক ঘুরপথে মালবাহী গাড়ি যাচ্ছে। বন্ধ বড় স্কুলবাস। ফলে পড়ুয়ারাও ঝুঁকি নিয়ে গঙ্গায় নৌকো পারাপারে বাধ্য হচ্ছে।

ওই রাস্তার উপরে ছোট কারখানা রয়েছে এক ব্যবসায়ীর। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের জেলার এমন অবস্থা জাহাজে বা ট্রাকে ভিন রাজ্য থেকে পণ্য এলে কেউ জেলায় ঢুকতে চায় না। আমাদের সেই পণ্য ট্রাক ছেড়ে ছোট গাড়িতে জেলায় আনতে হয়। পণ্য পরিবহণে দ্বিগুণ খরচ হয়ে যাচ্ছে।’’

সমস্যার কথা অস্বীকার করেননি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘সত্যিই হুগলিতে পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। রেলের তিনটি সেতু জোড়ার কাজ শেষ হয়নি। তবে রাজ্য পূর্ত দফতর দীর্ঘ দিন আগেই ওই সব সেতুর কাজ শেষ করে দিয়েছে। আমরা জেলা পরিষদের শেষ বৈঠকেও রেলকে ফের চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু চিঠি দিয়েও কাজ হচ্ছে না।’’ এ বিষয়ে রেলের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘রেলের অংশের কাজ পর্যায়ক্রমে শুরু হবে।’’

রেলের কাজ কবে শুরু হয়, তার অপেক্ষায় হুগলিবাসী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন