পুলিশি ‘জুলুম’, টানা ট্যাক্সি বন্ধের ডাক হাওড়ায়

বিক্ষোভকারী ট্যাক্সি সংগঠনের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে হাওড়া সিটি পুলিশ চালকদের নানা ভাবে হেনস্থা করে আসছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাওড়া শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৯ ০১:২৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

হাওড়ার ট্যাক্সিচালকদের উপরে পুলিশি জুলুমের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিল বামপন্থী ট্যাক্সি ইউনিয়ন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্যাক্সি অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি’। সংগঠনের নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে হাওড়ায় সব রকম ট্যাক্সি বন্ধ থাকবে। যদিও তৃণমূল প্রভাবিত ‘প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’ ধর্মঘটে অংশ না নিয়ে গাড়ি চালাবে বলে জানিয়েছে। পুলিশি জুলুমের প্রতিবাদে সোমবার বাম ট্যাক্সি সংগঠনের তরফে হাওড়া স্টেশনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।

Advertisement

বিক্ষোভকারী ট্যাক্সি সংগঠনের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে হাওড়া সিটি পুলিশ চালকদের নানা ভাবে হেনস্থা করে আসছে। পাশাপাশি তাঁদের উপরে চলছে জুলুমও। তারই প্রতিবাদে এ দিন হাওড়া রেল পুলিশের অফিসের সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন চালকেরা। সেখানে এআইটিইউসি অনুমোদিত ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্যাক্সি অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটির আহ্বায়ক নওলকিশোর শ্রীবাস্তব জানান, চালকদের উপরে পুলিশি অত্যাচার নিয়ে গত ২৪ সেপ্টেম্বর হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (ট্র্যাফিক)-এর সঙ্গে এক বৈঠক হয়েছিল। তাঁর দাবি, সেখানে ডিসি আশ্বাস দিয়েছিলেন, এক মাসের মধ্যে সমস্যার সমাধান করা হবে। কিন্তু তার পরেও পুলিশি জুলুম বন্ধ হয়নি।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া দিয়ে প্রতিদিন প্রি-পেড ট্যাক্সি চলে প্রায় পাঁচ হাজার। অন্য ট্যাক্সি চলে প্রায় চার হাজারের মতো। এই ৯ হাজার ট্যাক্সি না চললে যাত্রীরা যে চরম দুর্ভোগে পড়বেন, তা মানছে তারাও। যদিও পাল্টা অভিযোগে পুলিশের বক্তব্য, হাওড়া স্টেশনে ইদানীং আবার মাথা তুলেছে এক শ্রেণির দালাল-চক্র। প্রি-পেড ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে না দাঁড়িয়ে ওই চালকেরা দালাল-চক্রের সাহায্যে যাত্রী তুলছেন। তাঁদের থেকে বেশি টাকাও নিচ্ছেন। পুলিশ ধরে কেস দিলেই সেটা পুলিশি জুলুম বলে দাবি করছেন।

Advertisement

নওলকিশোরের অভিযোগ, এরই মধ্যে গত ২৬ অক্টোবর হাওড়া সিটি পুলিশের এক ট্র্যাফিক কর্মী মারধর করেন বিনোদ মাহাতো নামে এক ট্যাক্সিচালককে। মারের চোটে গুরুতর জখম হন তিনি। নওলকিশোর বলেন, ‘‘ঘটনার প্রতিবাদে ৩০ অক্টোবর সংগঠনের পক্ষ থেকে হাওড়ার পুলিশ কমিশনারকে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও ছবিটা বিশেষ পাল্টায়নি। এরই প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। ১৫ নভেম্বর থেকে কলকাতা থেকে হাওড়ায় কোনও ট্যাক্সি আসবে না।’’

এ ব্যাপারে ডিসি (ট্র্যাফিকের) দায়িত্বে থাকা ডিসি (উত্তর) ওয়াই রঘুবংশী বলেন, ‘‘ট্যাক্সিমালিকদের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। ওঁদের সব বলাও বলেছে। আমরা ফের আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করব।’’

যদিও তৃণমূলের প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন জানিয়ে দিয়েছে, তারা এই ধর্মঘটে অংশ নিচ্ছে না। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শম্ভুনাথ দে বলেন, ‘‘জোর করে ট্যাক্সি আটকালে তার মোকাবিলা আমরা করব। হাওড়া স্টেশনে প্রি-পেড ট্যাক্সি চালায় হাওড়া সিটি পুলিশ। তারাও নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে। তাই আদৌ এই ধর্মঘট হবে বলে মনে হয় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন