ঐতিহাসিক এই জনপদে গুণিজনের স্মৃতিরক্ষায় উদ্যোগের অভাব রয়েছে

গুপ্তিপাড়া: চিঠিপত্রগুপ্তিপাড়া: চিঠিপত্র

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৫ ০১:০৩
Share:

বিন্ধ্যবাসিনী মন্দির। ছবি: প্রকাশ পাল।

ঊনবিংশ শতকের শেষ পর্যন্ত গুপ্তিপাড়া সংস্কৃত শিক্ষার পীঠস্থান হিসেবে বিবেচিত হত। আবার এখানকার শিক্ষাব্রতীরা ইংরেজি শিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন। এখানকার বিজ্ঞান, সঙ্গীতচর্চা, আধ্যাত্মিকতা, কাব্য, সাহিত্য এবং জ্ঞানের উন্মেষে নিয়োজিত বহু মানুষের স্মৃতি রক্ষায় কেউ উদ্যোগী হয়নি। পণ্ডিত বাণেশ্বর বিদ্যালঙ্কার, সঙ্গীতগুরু কালী মির্জা বা বৈজ্ঞানিক-চিকিৎসক ইন্দুমাধব মল্লিকের স্মৃতি সংরক্ষিত হয়নি। ভুলতে বসেছি ইংরেজির শিক্ষক ঈশানচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, মহেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রব্রাজিকা ভারতীপ্রাণা, কবিয়াল ভোলা ময়রা, বিপ্লবী ভূপতি মজুমদারের মতো গুণীজনকে। মোহনলালের স্মৃতিবিজড়িত স্থান পায় না উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ। অবশ্য অন্য ছবিও রয়েছে। গুপ্তিপা়ড়া আদর্শ গ্রাম হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বৃন্দাবন চন্দ্র মঠের মন্দির সমূহ, দেশকালী মন্দির, রথযাত্রা উৎসব, রঘুনাথ মন্দির, বিন্ধ্যবাসিনীতলা, সুলেমান সাধুর আশ্রম-সহ গঙ্গার পাড় বরাবর অঞ্চল সাজিয়ে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করার উদ্যোগ চলছে। পরিকাঠামো উন্নয়ন, সৌন্দর্য্যায়ন, সুসংহত পরিকল্পনা যেমন দরকার, বিদ্বজ্জনদের স্মৃতিরক্ষার্থে সংগ্রহশালা নির্মাণ, হোটেল, বাসস্ট্যান্ড, নির্মাণও জরুরি। জল, নিকাশি, পরিবেশ অনুকূল শৌচালয় স্থাপনও জরুরি। এ জন্য দরকার সমবেত উদ্যোগ।

Advertisement

সুব্রত লাহিড়ী। গুপ্তিপাড়া, রায়পাড়া

Advertisement

রাস্তার উন্নতি চাই

গুপ্তিপাড়া নিয়ে এমন একটি প্রবেদন প্রকাশের জন্য ধন্যবাদ। আমি একজন নিতান্তই গৃহবধূ। বিবাহসূত্রে প্রায় ১০ বছর ধরে এখানে আছি। এখানকার ইতিহাস, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আমাদের কাছে গর্বের। রথযাত্রায় এখানে বিভিন্ন জেলা থেকে প্রচুর মানুষ আসেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এখানে বসবাসের সুবাদে একটা সমস্যা থেকেই গিয়েছে। সেটা হল এখানকার রাস্তাঘাট। রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই খারাপ। পাকা রাস্তার সংখ্যা কম। তার ওপর সেগুলিরও শোচনীয় অবস্থা। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ রাস্তাগুলি সংস্কারের ব্যবস্থা করুন। এ ছাড়া গঙ্গার পাড়টিকেও যদি ভালভাবে সাজানো যায় তা হলে পযর্টনকেন্দ্র হিসাবে গুপ্তিপাড়া আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

সৌমিতা বাগ সরকার। বৈদিকপাড়া

চাই আইটিআই

আপনাদের ‘আমার শহর’-এ গুপ্তিপাড়ার বিষয়ে পড়ে ভাল লাগল। কিন্তু দুই পর্বের লেখাতেই এখানকার শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কোনও উল্লেখ না দেখে হতাশ হয়েছি। আমি একজন ছাত্র। এখানে দু’টি উচ্চ মাধ্যমিক ও ৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং দু’টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ রয়েছে। তবে এ সব থাকলেও ছাত্রছাত্রীদের কারিগরি শিক্ষার উন্নতিতে প্রয়োজন আইটিআই-এর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় বলেছিলেন রাজ্যের সব ব্লকে একটি করে আইটিআই তৈরি করা হবে। সেই প্রেক্ষিতে আমার আবেদন বলাগড় ব্লকে একটি আইটিআই তৈরির ব্যাপারে প্রশাসন উদ্যোগী হোক।

রৌনক গাঙ্গুলি। গুপ্তিপাড়া

মোহনলালের নামে রাস্তা হোক


মোহনলালের স্মৃতিস্তম্ভ।

হুগলির প্রত্যন্ত এই জনপদকে ‘আমার শহর’ হিসাবে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই। ইতিহাসের নানা আকর এই জনপদকে সমৃদ্ধ করেছে। বাড়িয়েছে এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব যার একটা ঝলক দেখলাম ‘আমার শহরে’। ভাল লাগল, সেই সঙ্গে এমন একটি জনপদের বাসিন্দা হিসাবে গর্ববোধ হচ্ছে। পলাশীর যুদ্ধে বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌল্লার ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাঁর সুযোগ্য সেনাপতি মোহনলালের বীরগাথাআজও লোকের মুখে ফেরে। সেই মোহনলাল এই গুপ্তিপাড়ার সন্তান ছিলেন। তাঁর স্মৃতিতে এখানে বৃন্দাবন জিউ মঠের কাছে স্মৃতিস্তম্ভও রয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের কাছে অনুরোধ মোহনলালের স্মৃতিতে এখানে গড়ে তোলা হোক কোনও শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, হোক কোনও রাস্তার নামকরণ। পরাধীন ভারতে আরও এক বিপ্লবী গুপ্তিপাড়ার নাম উজ্জ্বল করেছেন, তিনি ভূপতি মজুমদার। পরবর্তী কালে তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ত্রাণমন্ত্রী হয়েছিলেন। তাঁর স্মৃতিরক্ষায় একটি আবক্ষ মূর্তি বসানোর জন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ রইল।

বলরাম দাস। গুপ্তিপাড়া

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন