মনে হচ্ছিল বাঁচাতে পারব না বোনকে

লকেট আমার থেকে সাত বছরের ছোট। মা মারা যাওয়ার পর আমিই বোনকে আগলে আগলে রাখি। এ দিন একটা সময় মনে হচ্ছিল, ওকে বোধহয় বাঁচাতে পারব না।

Advertisement

মালা চট্টোপাধ্যায় (লকেট চট্টোপাধ্যায়ের দিদি)

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৯ ০৫:৩৫
Share:

মালা চট্টোপাধ্যায়।—নিজস্ব চিত্র।

আমাদের বাড়ি দক্ষিণেশ্বরে। কালীমন্দিরের কাছে। গত ২৪ মার্চ থেকে ঠিকানাটা সাময়িক বদলেছে। বোন লকেট হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হওয়ার পর থেকে ওঁর সঙ্গে ব্যান্ডেলের গ্রিন পার্কে জিটি রোডের কাছেই বিশ্বাস-বাড়িতে ভাড়া থাকছি। এই বাড়িরই একাংশে আমরা থাকি। অন্য অংশে বাড়িওয়ালা। এটা বর্ধিষ্ণু এলাকা। কথায় বলে, গঙ্গার পশ্চিম কূল বারাণসী সমতুল। কিন্তু শুক্রবার সকালে চোখের সামনে যা ঘটল, সেই অভিজ্ঞতা আগে কখনও আমার হয়নি। আশাও করিনি।

Advertisement

এ দিন সকালে লকেট স্থানীয় পুরসভার কয়েকটা ওয়ার্ডে প্রচার কর্মসূচি সারে। তার পরে ওলাইচণ্ডী মন্দিরে পুজো দিয়ে ১১ নাগাদ ফিরে আসে। কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে পরের কর্মসূচিতে যাওয়ার কথা ছিল। হঠাৎ খান পনেরো মোটরবাইক বাড়ির সামনে এসে থামল। বাইক থেকে নেমে রে-রে করে কিছু যুবক বাড়িতে লাগানো দলের ঝান্ডা খুল‌ে একতলায় ভাঙচুর করতে করতে উপরে উঠে এল। আমরা দোতলায় কথা বলছিলাম। শুধু মহিলারাই ছিলাম। বিপদ আঁচ করে বোনকে পাশের ঘরে লুকিয়ে ফেলি। ওরা বসার ঘরের টিভি, কম্পিউটার, আসবাব ভেঙে তছনছ করে ওরা। ওদের মারমুখী চেহারা দেখে আমরা এক কোণে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। নীচে থেকে কেউ ওদের সমানে ভাঙার নির্দেশ দিচ্ছিল। প্রায় আধ ঘণ্টা তাণ্ডব চালিয়ে ওরা চলে যায়।

লকেট আমার থেকে সাত বছরের ছোট। মা মারা যাওয়ার পর আমিই বোনকে আগলে আগলে রাখি। এ দিন একটা সময় মনে হচ্ছিল, ওকে বোধহয় বাঁচাতে পারব না। ভাগ্যিস, অন্য ঘরে ওকে সরিয়ে দিয়েছিলাম। হুগলি নিয়ে আমাদের উচ্চ ধারণা ছিল। এত দিন কোনও নিরাপত্তা চাইনি। কিন্তু এ দিন যা হল, তার পরে বোনের এবং এই বাড়ির জন্য আমরা নিরাপত্তা চাইছি। পুলিশকে সব জানিয়েছি। সন্ধ্যা পর্যন্ত অবশ্য নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা হয়নি।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন