দোকানে বিকোচ্ছে প্লাস্টিকের কাট আউট, ব্যানার, পোস্টার।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ভোট প্রচারে নানা ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে প্লাস্টিক। প্রতীক, ব্যানার, কাট আউট, হোর্ডিং— সব কিছুই হচ্ছে প্লাস্টিকের। ভোট প্রচারে প্লাস্টিকের এই বেলাগাম ব্যবহারে পরিবেশের বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদরা। তাঁদের দাবি, আইন করে ভোট প্রচারে বন্ধ হোক প্লাস্টিকের ব্যবহার।
কয়েক বছর আগেও প্রচারে প্লাস্টিকের চল সে ভাবে ছিল না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কাপড়ের ব্যবহার হত। হোর্ডিং, ব্যানারের পাশাপাশি কাপড় দিয়েই তৈরি হত প্রতীক। আর ছিল কাগজের পোস্টার। ফলে, প্রচারে পরিবেশের ক্ষতি হত কম। কিন্তু এখন প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্যবহার হচ্ছে প্লাস্টিক। প্রচারের সঙ্গে যুক্ত রাজনৈতিক কর্মীরা জানাচ্ছেন, প্লাস্টিক ব্যবহার অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক। দাম কম পড়ে। তার উপর জলে নষ্ট হয়ে যায় না। সেই কারণেই এর ব্যবহার বাড়ছে বলে মত তাঁদের। এই প্রবণতা রুখতেই এখন সরব হয়েছে প্রকৃতি-পরিবেশ নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থাগুলি। আইন করে ইতিমধ্যে ভোট প্রচারে শব্দবিধির উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। সেই পথে প্লাস্টিকের ব্যবহারেও নিয়ন্ত্রণ চাইছে তারা।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
চন্দননগর পরিবেশ অ্যাকাডেমির কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভোটে শব্দবিধির ক্ষেত্রে যখন আইন করা গিয়েছে, তখন প্লাস্টিকের ক্ষেত্রে আইন করা যাবে না কেন? এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে এগিয়ে আসতে হবে। আইন করেই ভোট প্রচারে প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘শুধু ভোট নয়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের ব্যবহার যে ভাবে বাড়ছে, তা আইন করেই বন্ধ করা উচিত।’’ ভোট প্রচারে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের আর্জি জানিয়ে তাঁদের সংস্থার তরফে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে চিঠি লেখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
উত্তরপাড়া-সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে পরিবেশ নিয়ে কাজ করেন শশাঙ্ক কর। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আইন করলে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলিকে তা প্রয়োগে বাধ্য করবে। একমাত্র সেই পথেই প্লাস্টিকে লাগাম পরানো যেতে পারে।’’
এই বিষয়ে তৃণমূলের হুগলি জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘প্লাস্টিক বন্ধে বিধি হলে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের মতো আমরাও মেনে চলব। প্রকৃতির প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা যেতেই পারে।’’ সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘শুধু ভোট কেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্যের প্রয়োজনে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করা জরুরি।’’ একই মত বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের রাজ্য সভাপতি স্বপন পালের।