ফাঁকা: ফিরহাদ হাকিমের সভা। ছবি: মোহন দাস
কাতারে কাতারে মানুষ এলেন শুধু হেলিকপ্টার দেখতে!
নেতাদের ডাকাডাকি, দৌঁড়ঝাঁপই সার হল। ভিড় পৌঁছল না সভাস্থলে। শনিবার আরামবাগের পল্লিশ্রীতে দ্বারকেশ্বর নদীর চরে তৃণমূল প্রার্থী অপরূপা পোদ্দারের সমর্থনে আয়োজিত পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের জনসভা কার্যত ফাঁকাই রয়ে গেল! মঞ্চ থেকে প্রার্থী অনুরোধেও সাড়া মিলল না। এর পিছনে প্রবল গরমকেই দুষছেন তৃণমূল নেতারা। কিন্তু বিরোধীদের দাবি, এটা তৃণমূলের প্রতি মানুষের সমর্থন কমার ইঙ্গিত।
আরামবাগ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অপরূপার সমর্থনে গত মঙ্গলবারই প্রথম আরামবাগ এবং খানাকুলে প্রচার-সভা করে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দুই সভাতেও তেমন ভিড় দেখা যায়নি। শনিবার আসেন ফিরহাদ। দুপুর ২টো নাগাদ তাঁর হেলিকপ্টার যখন নামছে, প্রখর রোদ উপেক্ষা করে, ঝুঁকি নিয়েও বহু মানুষ নদীবাঁধে উঠে পড়েন। হেলিপ্যাডের কিছুটা দূরে, পুরসভার জঞ্জাল ফেলার জায়গার পাশে হয়েছিল সভামঞ্চ। যেখানে অন্তত ১০ হাজার লোক ধরে, সেখানে অল্প লোক দেখে আক্ষেপ শোনা গিয়েছে তৃণমূল নেতাদের গলায়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আরামবাগের বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা এবং পুরপ্রধান স্বপন নন্দী অবশ্য চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি। নদীবাঁধে ওঠা জনতাকে সভাস্থলের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁরা বিস্তর দৌড়ঝাঁপ করেছেন। মঞ্চ থেকে অপরূপাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমার সমর্থনে এখানে কোনও সভা হচ্ছে না। রাজ্যের ৪২টি কেন্দ্রেই প্রার্থী আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে উন্নয়ন আমরা তাঁর হাত ধরে করেছি, আমাদের মা-বোনেদের যে ভাবে তিনি সুরক্ষিত করেছেন, তাঁর হাত শক্ত করতে তাই সভায় আসুন। গত পাঁচ বছরে যখনই ডেকেছেন, পাশে থেকেছি।’’
তবু ভিড় বাড়েনি। যে ক’জন সভায় হাজির ছিলেন, তাঁরা নাকে হাত চাপা দিয়ে বসে থাকেন। কারণ, জঞ্জালের দুর্গন্ধ। বিদায়ী সাংসদকে এলাকায় ক’বার দেখা গিয়েছে, তা নিয়েও ফিসফাস চলেছে। ফিরহাদ বলেন, “প্রচণ্ড গরম। তৃণমূলের সভায় যে পরিমাণ লোক হয়, সে রকম হয়নি। তবে এটাও ঠিক, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরামবাগে সভা করে গিয়েছেন। তিনি কোথাও সভা করে গেলে তারপর আর সেখানে সভার দরকার হয় না।’’
ভিড় না-হওয়ার পিছনে পুরপ্রধান স্বপন নন্দীর দাবি, ‘‘এত গরমে মানুষ থাকবেন কী করে? তাই ভিড় হয়নি। তবে, এতে কিছু প্রমাণ হয় না। মানুষ তৃণমূলের সঙ্গেই রয়েছেন।’’ বিরোধীরা সে কথা মানেননি। বিজেপির আরামবাগ জেলা সভাপতি বিমান ঘোষের দাবি, ‘‘মানুষ আর ওদের সঙ্গে নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় যেখানে লোক হচ্ছে না, সেখানে ফিরহাদ হাকিম কী করবেন?’’ সিপিএমের আরামবাগ এরিয়া সম্পাদক পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তৃণমূলের দুর্নীতি, উদ্ধত আচরণ ইত্যাদি নানা কারণে আরামবাগের মানুষ মুখ ফেরাচ্ছেন।’’