ভোট দিয়ে বেরোতেই হাতে বাতাসা-জল 

কেন্দ্রীয় বাহিনীর তৎপরতায় অবাঞ্ছিত লোকজন বুথের ভিতরে ঢুকতে পারেনি। প্রচণ্ড গরমে সুষ্ঠু ভাবে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করতে পেরে খুশি ভোটাররা।

Advertisement

তাপস ঘোষ ও সুশান্ত সরকার

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৯ ০২:৫৩
Share:

স্বাদ-বদল: বিজেপির বুথ কার্যালয় থেকে ভোটারদের বাতাসা-জল বিলি। সোমবার দুপুরে পান্ডুয়ার বেলুন গ্রামে নিজস্ব চিত্র

সোমবার সকাল ১০টা। পান্ডুয়ার শশীভূষণ সাহা উচ্চ বিদ্যালয়। ভোটারদের লম্বা লাইন। বুথে পাহারায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। বুথের চৌহদ্দিতে অবাঞ্ছিত ভিড় নেই।

Advertisement

অথচ, এক বছর আগে এখানেই পঞ্চায়েত ভোটের দিন শাসকদলের ছেলেরা রীতিমতো দাপিয়ে বেরিয়েছে স্কুলের মাঠ জুড়ে। সে দিন ভোটে শাসকদলের ‘সন্ত্রাসের’ অভিযোগ উঠেছিল। বছর ঘুরে লোকসভা ভোটের শেষে অনেকেই বলছেন, উৎসবের মেজাজেই ভোট দেওয়া গিয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর তৎপরতায় অবাঞ্ছিত লোকজন বুথের ভিতরে ঢুকতে পারেনি। প্রচণ্ড গরমে সুষ্ঠু ভাবে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করতে পেরে খুশি ভোটাররা।

পান্ডুয়া ছাড়াও বলাগড়, পোলবা-দাদপুরের অনেক বুথে ঘুরেই দেখা গিয়েছে এই ছবি। পান্ডুয়া স্টেশন রোড এলাকার বাসিন্দা বছর সত্তরের সরজুবালা দেবীর গলায় সন্তুষ্টি, ‘‘এত বছর ধরে ভোট দেখছি। এ বারের মতো সুন্দর ব্যবস্থা নজরে আসেনি। ভোট মানেই চোখরাঙানি, মারপিট দেখতেই অভ্যস্ত ছিলাম। এ বারের পরিবেশ অনেক সুন্দর ছিল।’’ হুগলি কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী প্রদীপ সাহাও বলছেন, ‘‘মানুষ নিজের ভোট নিজে দিতে পেরেছেন। খুব ভাল ভোট হয়েছে।’’

Advertisement

অবশ্য অন্য জায়গার মতো হুগলি লোকসভা কেন্দ্রেও কিছু জায়গায় ইভিএম বিকল হওয়ার খবর এসেছে। তার জেরে ভোটগ্রহণ বন্ধ থেকেছে কিছুক্ষণের জন্য। তবে, বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মুখে বিশেষত ধনেখালি বিধানসভা এলাকায় সন্ত্রাসের অভিযোগ শোনা গিয়েছে।

লকেটের অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূল প্রার্থী রত্না দে নাগ কোনও মন্তব্য করেননি। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রের প্রায় সব ক’টি বিধানসভা এলাকাতেই ঘুরেছি। শান্তিপূর্ণ ভাবেই ভোট হয়েছে।’’ প্রদীপবাবু জানান, তিনি পান্ডুয়ার পাশাপাশি ধনেখালির অন্তত ৩০টি বুথে ঘুরেছেন। শাসকদলের সন্ত্রাস চোখে পড়েনি পোড়খাওয়া এই সিপিএম নেতার। লকেটের অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘উনি মেকি অভিযোগ করছেন।’’ কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস প্রার্থী প্রতুলচন্দ্র সাহাও। তিনি বলেন, ‘‘কোনও অভিযোগ নেই। আমার কার্ডও খুঁটিয়ে দেখে তবেই বুথে ঢুকতে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান‌রা।’’

এ দিন নানা জায়গায় দেখা গিয়েছে, ভোটারদের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোথাও ছিল কচুরি, আলুর দম, মিষ্টি। কোথাও আবার বোঁদে-জল। বিজেপির তরফে পান্ডুয়ার বেলুন গ্রামে বাতাসা, বোঁদে-জল দেওয়া হয়। পান্ডুয়ারই ভেজনপুর গ্রামে মানুষ ভোট দিয়ে বেরোতেই কিছুটা দূরে শালপাতার ছোট থালায় কচুরি-আলুর দম আর একটি মিষ্টি হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় তৃণমূলের তরফে। ওই ব্লকেরই পাটরা গ্রামে আবার তৃণমূলের কর্মীরা বীরভূমের দলীয় নেতা অনুব্রত মণ্ডলের ‘দাওয়াই’ নকুলদানা দিলেন ভোটারদের।

সঙ্গে জল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন