মনে হচ্ছে নতুন জীবন পেলাম!
আমার চেনা ওই বাস চালকের কাছে সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকব। উনি এগিয়ে না এলে আরও কত যে লাঠি-রডের ঘা পড়ত, কে জানে! হয়তো মরেই যেতাম! শুধু ৫০০ টাকা কালীপুজোর চাঁদা দিতে চাইনি বলে এত মার!
দশ বছর ধরে লরি চালাচ্ছি। লরি নিয়ে কত জায়গায় যেতে হয়! ভিন্ রাজ্যেও। নানা জায়গায় নানা পুজোর চাঁদা দিতে আমরা অভ্যস্ত। এতদিন কোথাও ঝামেলায় পড়িনি। শুক্রবার রাতে বাড়ির কাছেই পোলবার মহানাদে যে ঝামেলায় পড়ব, কে জানত! আলু নিয়ে যাচ্ছিলাম কাকদ্বীপ। ওরা প্রথমে হাত তুলে লরি থামাতে চায়। আমি আমল দিইনি। সেটাই কাল হল।
হাফ কিলোমিটারও এগোইনি। দেখি, তিনটে মোটরবাইকে ওরা পাঁচ-ছ’জন ধাওয়া করছে। আমিই লরি থামাই। তারপরে ওরা ঘিরে ধরে। ৫০০ টাকা চাঁদা দিতে পারব না বলতেই লরি থেকে নামায়। ওদের সঙ্গে লাঠি, রড, বাঁশ ছিল। আমি একা। ২০ টাকা দিতে পারি, বলতেই শুরু হল মার। জায়গাটা ফাঁকা ছিল। আর কোনও গাড়ি, ট্রাকও দেখছিলাম না। কে বাঁচাবে আমাকে? স্ত্রী, মায়ের কথা বারবার মনে পড়ছিল। মনে হচ্ছিল, মরে যাব।
হঠাৎ দেখি, সামনে একটা বাস থামল। একজন চিৎকার করতে করতে এগিয়ে এলেন। হামলাকারীরা থমকে গেল। পরে দেখি, আরও কয়েকজন আসছেন। হামলাকারীরা পালাল। আমি তখনও রাস্তায় পড়ে। যিনি আমাকে বাঁচাতে প্রথমে এগিয়ে এসেছিলেন, তিনি আমার পরিচিত। আমরা এক জায়গাতেই থাকি। নতুন অভিজ্ঞতা হল। কিছু লোকের অমানবিকতার শিকার হলাম। আবার এক জনের মানবিক মুখও দেখলাম।