খোঁজ: পোড়া ঘর খুঁজে দেখছে খুদে। —নিজস্ব চিত্র।
রান্নার গ্যাস ‘লিক’ করে অগ্নিকাণ্ডের জেরে পুড়ে ছাই হল দুই ভাইয়ের পাশাপাশি দুই বাড়ি। জখম হলেন দুই পরিবারের চার জন। তাঁদের মধ্যে এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সোমবার দুপুরে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে উলুবেড়িয়ার রাজাপুর থানা এলাকার রঘুদেবপুর পঞ্চায়েতের বলরামপোতা-২ কলোনিতে। অগ্নিদগ্ধদের মধ্যে রয়েছেন ত্রিনাথ মহাজন, তাঁর স্ত্রী মুনমুন, বড় মেয়ে মৌসুমি এবং ত্রিনাথের দাদা গৌতমের স্ত্রী বিউটি। বিউটিকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হলেও বাকি তিন জন উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মৌসুমির অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টি বাড়িই একতলা। টালির চালের। ওই দুপুরে নিজের রান্নাঘরে গ্যাসে রান্না করছিলেন মুনমুন। পাশে স্টোভে মাছ ভাজছিলেন মৌসুমি। হঠাৎ গ্যাস ফুরিয়ে যায়। নতুন সিলিন্ডার এনে পাইপের সঙ্গে সংযোগ করছিলেন মুনমুন। তখনই গ্যাস ‘লিক’ করতে শুরু করে। জ্বলন্ত স্টোভ থেকে রান্নাঘরে আগুন লাগে। নিমেষেই তা ত্রিনাথের পুরো বাড়ি, বাড়ি সংলগ্ন তাঁর ব্যাগের কারখানা এবং পাশে দাদার বাড়িতেও আগুন ছড়ায়। তা দেখে পড়শিরা এসে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বের করতে গিয়েই ওই চার জন অগ্নিদগ্ধ হন। খবর পেয়ে পুলিশ আসে। উলুবেড়িয়া থেকে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগেই দু’টি বাড়ি পুরো পুড়ে যায়।
মৌসুমি উলুবেড়িয়া কলেজের প্রথম বর্ষের কলা বিভাগের ছাত্রী। তিনি বলেন, ‘‘ডিসেম্বর মাসে পরীক্ষা। জ্বলন্ত ঘর থেকে পরীক্ষার অ্যাডমিট এবং কলেজের কিছু কাগজপত্র ও বই বের করে আনতে গিয়েই ঝলসে গেলাম। আমার মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের সব সার্টিফিকেট পুড়ে গিয়েছে।’’ ত্রিনাথবাবুর দাদা অটো চালান। বাড়িতে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি যখন ফিরে আসেন, তখন সব ছাই। গৌতম বলেন, ‘‘এখন কোথায় রাত কাটাব, কিছুই বুঝতে পারছি না। মাথার ছাদ চলে গেল।’’ উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের বিডিও নিশীথকুমার মাহাতো জানিয়েছেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত দু’টি পরিবারের কাছে প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হয়েছে।