এলাকা দখলের লড়াই

দুষ্কৃতী তাণ্ডবে আতঙ্কিত চন্দননগর

ফের দুষ্কৃতী তাণ্ডবে আতঙ্ক ছড়াল চন্দননগরের হরিদ্রাডাঙায়। শনিবার রাতের ওই হামলায় জখমও হয়েছেন কয়েকজন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৭ ০২:৪১
Share:

আহত: রবিবার নিজস্ব চিত্র

ফের দুষ্কৃতী তাণ্ডবে আতঙ্ক ছড়াল চন্দননগরের হরিদ্রাডাঙায়। শনিবার রাতের ওই হামলায় জখমও হয়েছেন কয়েকজন।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চন্দননগরের হরিদ্রাডাঙায় ৮-১০ জনের এক সশস্ত্র দুষ্কৃতীদল ওই দিন রাত ১১টা থেকে ঘণ্টা দুয়েক তাণ্ডব চালায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার কিছু যুবক রাস্তার ধারে গল্প করছিলেন। সেই সময় পাশের পাড়ার বাসিন্দা বলদেব রায় নামে এক যুবকের নেতৃত্বে দুষ্কৃতীরা তাঁদের উপর হামলা চালায়। হামলাকারীদের বাধা দিতে গিয়ে জখম হন স্থানীয় যুবক সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়। অভিযোগ, হামলাকারীরা তাঁর মাথায় বন্দুকের বাট দিয়ে মারে। মাথা ফেটে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থাতেই তিনি কোনওরকমে পালিয়ে যান। পরে পুলিশের সহযোগিতায় আহত সুব্রতবাবুকে চিকিৎসার জন্য চন্দননগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে হামলাকারীরা শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলিও চালিয়েছে। এর বিরুদ্ধে তাঁরা চন্দননগর থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন। রাতের অন্ধকারে এ ভাবে দুষ্কৃতী হামলায় এলাকার মানুষ আতঙ্কিত। পুলিশ পৌঁছনোর আগেই অবশ্য হামলাকারীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। দুষ্কৃতীরা চলে গেলে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান। বাসিন্দাদের অনেকে জানান, হামলাকারীরা যাওয়ার আগে হুমকি দেয়, এলাকায় থাকতে গেলে তাদের কথা মেনে চলতে হবে। তা ছাড়া তাদের দাবি না মেটালে অবস্থা খারাপ করে দেওয়া হবে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পাশের এলাকার কিছু যুবক দুষ্কৃতীমূলক কাজে লিপ্ত হয়ে এলাকায় তোলাবাজি, ছিনতাই থেকে নানা অসামাজিক কার্যকলাপ শুরু করেছে। এলাকায় নিজেদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। তাঁদের অভিযোগ, দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য এতটাই বেড়েছে যে সন্ধ্যার পর বাড়ির মহিলারা রাস্তায় বেরোতে ভরসা পাচ্ছেন না। ছেলেমেয়েদের গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে পাঠিয়ে বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত চিন্তায় থাকতে হচ্ছে। পুলিশকে জানিয়েও কাজ হচ্ছে না।

Advertisement

গত ৩১ জানুয়ারি চন্দননগরের মধ্যাঞ্চল এলাকায় দিনের বেলায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হন এক যুবক। তার আগে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর চন্দননগরের বিবিরহাট উত্তরাঞ্চলে দুষ্কৃতীরা এক যুবককে কুপিয়ে খুন করেছিল। কয়েক মাস আগে হরিদ্রাডাঙাতেই পরপর দু’বার দু’দল দুষ্কৃতীর তাণ্ডবে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন এক যুবক। স্থানীয় বাসিন্দা কমলেশ গঙ্গ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা যে ভাবে এলাকা দখলের লড়াইয়ে নেমেছে তাতে সাধারণ মানুষের সুস্থ ভাবে বাস করাই দায়।’’ দুষ্কৃতীদের এমন বাড়বাড়ন্তে পুলিশের গাফিলতিকেই দুষছেন বাসিন্দারা। চন্দননগর পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জয়ন্তপ্রসাদ চট্ট্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পাশের পাড়ার কিছু যুবকের সঙ্গে বহিরাগত কিছু দুষ্কৃতী মিলে নিজের প্রতিপত্তি বাড়াতে এ সব করছে। এ বিষয়ে পদক্ষেপের জন্য প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’’

পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দুষ্কৃতীদমনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement