পাকিস্তানে বসে রয়েছে স্বামী। স্ত্রী এ দেশে। আর এখানে বসেই সে চালিয়ে যাচ্ছে স্বামীর টাকা পাচারের কারবার। হাওড়ার টাকা পাচার চক্রের অন্যতম চাঁই মহম্মদ ওমরকে গ্রেফতার করার পরে এমনই তথ্য হাতে এসেছে সিআইডি-র গোয়েন্দাদের। শুক্রবার দিল্লি থেকে পাকড়াও করা হয় ওমরকে। শনিবার তাকে হাওড়ায় নিয়ে আসেন গোয়েন্দারা। এ দিনই ওমরকে হাওড়া আদালতে তোলা হয়।
সিআইডি সূত্রের খবর, জেরার মুখে ওমর দাবি করেছে, ওই টাকা পাচার চক্রের মাথা পাকিস্তানের বাসিন্দা আসরাফ হাজি। সে ওমরের আত্মীয়। ওমরের বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। ব্যবসায়ী সেজে সে থাকত দিল্লিতে। তার দাবি, আসরাফের দু’টি বিয়ে। প্রথম স্ত্রী পাকিস্তানেই থাকে। দ্বিতীয় স্ত্রী আফসানা পরভিন থাকে কানপুরে। সেখানে বসেই আসরাফের কথা মতো পুরো চক্রটি নিয়ন্ত্রণ করে সে।
সিআইডি জানিয়েছে, একটি ব্যাঙ্ক জালিয়াতির তদন্তে নেমে হাওড়ার গোলাবাড়ি থানার পুলিশ টাকা পাচার চক্রের দুই চাঁই-সহ আট দুষ্কৃতীকে পাকড়াও করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় ৬০টি এটিএম কার্ড-সহ নগদ কয়েক লক্ষ হাওয়ালার টাকা। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পারে, কলকাতা ও হাওড়ার বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লক্ষ লক্ষ টাকা জমা পড়ার পরেই তা তুলে নেওয়া হত দু’ঘণ্টার মধ্যে। এর পরে পাকিস্তানের নম্বর থেকে হোয়াট্সঅ্যাপে আসা নির্দেশ অনুযায়ী সেই টাকা তুলে দেওয়া হত বিভিন্ন এজেন্টদের হাতে। একটি অ্যাকাউন্টে লক্ষ লক্ষ টাকা আসার এক মাস পরে তা বন্ধ করে ফের অন্য ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলে চলত টাকা পাচার।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ বড়বাজারের এক ব্যবসায়ীকে ধরার পরেই পাকিস্তানের যোগ থাকার বিষয়টি সামনে আসে। তদন্তভার তুলে দেওয়া হয় সিআইডি-র হাতে। সেই সূত্রেই গোয়েন্দাদের জালে ধরা পড়ে ওমর। এ দিন ওমরকে নিয়ে হাওড়ায় আসেন সিআইডি-র গোয়েন্দারা। স্টেশন থেকেই তাঁকে হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দা দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তোলা হয় হাওড়া আদালতে।
তদন্তকারীদের কাছে ধৃতের দাবি, ভারতীয় নাগরিক হলেও আফসানা নিয়মিত পাকিস্তানে যায়। বর্তমানে সে কোথায় রয়েছে, তা অবশ্য তার জানা নেই। ওমর জানিয়েছে, চক্রের বাকি সদস্যদের নির্দেশ দিত আফসানা। যা ওমরের মাধ্যমে বাকি সদস্যদের কাছে ছড়িয়ে পড়ত।