হাঁসুয়ার কোপে নিজের শিশুকে মারল মা

মঙ্গলবার দুপুরে হুগলির বলাগড় থানার খামারগাছি হাতিকান্দা গ্রামে উদ্ধার হয়েছে ছোট্ট রাজ বর্মনের রক্তাক্ত মৃতদেহ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বলাগড় শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:২০
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্বামীর সঙ্গে অশান্তি। বাঁচার ইচ্ছেটাই নাকি চলে গিয়েছিল বছর বাইশের অলকা বর্মনের। কিন্তু মরে গেলে ছ’বছরের ছেলেটা যে ভেসে যাবে! তাই সবার আগে তার গলাতেই বসল হাঁসুয়ার কোপ।

Advertisement

ছেলের মৃত্যুর পর নির্বিকার মুখে এমনই দাবি করল মা।

মঙ্গলবার দুপুরে হুগলির বলাগড় থানার খামারগাছি হাতিকান্দা গ্রামে উদ্ধার হয়েছে ছোট্ট রাজ বর্মনের রক্তাক্ত মৃতদেহ। তার বাবা খোকন বর্মন ফুল ব্যবসার কাজে বর্ধমান গিয়েছিলেন সকালে। দুপুর দেড়টা নাগাদ বাড়ি ফিরে দেখেন ছেলের মৃতদেহ। তাঁর দাবি, ‘‘ঘরের মধ্যে পড়েছিল ছেলেটা। রক্ত গড়িয়ে যাচ্ছিল ঘরের বাইরে। আমার চিৎকার শুনে প়ড়শিরা ছুটে আসেন।’’

Advertisement

এক কোণে চুপচাপ বসেছিল অলকা। চোখে জল নেই। পুলিশের প্রশ্নের মুখে সে জানিয়েছে, ‘‘আমি মরতে চাই। ছেলেকে মেরে নিজে মরব ভেবেছিলাম। কিন্তু স্বামী তাড়াতাড়ি এসে যাওয়ায় আমার আর মরা হল না।’’

বছর আটেক আগে বিয়ে হয়েছিল নাবালিকা অলকার। রাজের আগে এক সন্তানের মৃত্যু হয়েছিল। রাজ পড়ত শিশু শ্রেণিতে। এ দিন সকালেও স্কুলে গিয়েছিল সে। বাড়ি ফেরে দুপুর ১২টা নাগাদ।

বলাগড় থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্মন দম্পতির ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে রক্তমাখা হাঁসুয়াটি। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, শিশুটির গলায় বেশ কয়েকবার ধারালো অস্ত্রের কোপ বসানো হয়েছে। খোকনের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে অলকাকে।

কিন্তু কী নিয়ে অশান্তি হত অলকা-খোকনের?

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, খোকনের কোনও বদনাম নেই এলাকায়। বরং অলকাই ছিল একটু খিটখিটে মেজাজের। তাই অশান্তি। ছেলেকেও মারধর করত প্রায় প্রতিদিন। খোকন বলেন, ‘‘স্কুল থেকে ফিরতে দেরি করলে, খেতে না চাইলে ছেলেকে মারত। আমি বাধাও দিয়েছি। কিন্তু তা বলে মেরে ফেলবে! এমন তো ভাবিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন