ক্ষোভ সামাল দিতে হুগলিতে মুকুল

ঠিকাদারদের অ্যাসোশিয়েসনকে ঢাল হিসেবে সামনে রেখে নেতাদের মদতে দেদার টাকা তোলা হচ্ছে। এর ফলে কাজের মান খারাপ হচ্ছে। তৈরির কিছুদিনের মধ্যেই নতুন রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। হুগলি জেলা পরিষদের কাজ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে দলের অন্দরেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৬ ০১:৪৬
Share:

চলছে বৈঠক। ছবি: তাপস ঘোষ।

ঠিকাদারদের অ্যাসোশিয়েসনকে ঢাল হিসেবে সামনে রেখে নেতাদের মদতে দেদার টাকা তোলা হচ্ছে। এর ফলে কাজের মান খারাপ হচ্ছে। তৈরির কিছুদিনের মধ্যেই নতুন রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। হুগলি জেলা পরিষদের কাজ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে দলের অন্দরেই। শনিবার হুগলিতে তৃণমূলের সংগঠনিক সহ-সভাপতি মুকুল রায় জেলা পরিষদের একটি বৈঠকে আসেন। তাঁকে সামনে পেয়ে এক মহিলা বিধায়ক ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি বলেন, “দলের বাইরের তো কেউ টাকা নিচ্ছেন না। আপনাকে দলের সেই সব লোকদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। কারা ওই সব টাকা নিচ্ছেন?’’ অন্য এক সদস্য অভিযোগ করেন, জেলা পরিষদে নিয়মমাফিক কোনও বৈঠকই হয় না। দলের নির্বাচিত সদস্যদের উপেক্ষা করে একতরফা ভাবে নিজের অযোগ্য লোকদের দিয়ে কাজকর্ম চালাচ্ছেন সভাধিপতি মেহেবুব রহমান।

Advertisement

বস্তুত, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মেহেবুব রহমান দায়িত্ব নেওয়া ইস্তক ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছেই জেলা পরিষদের কাজকর্ম নিয়ে। বিষয়টি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানেও পৌঁছয়। কলকাতার এক দলীয় বৈঠকে তাঁর সামনেই দাবি ওঠে সভাধিপতিকে সরাতে হবে। সেই ক্ষোভ সামলাতে রাজ্য নেতৃত্ব তড়িঘড়ি রফাসূত্র বের করে। একটি মনিটারিং কমিটি তৈরি করে দেওয়া হয়। সভাধিপতিকে দলের তরফে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে গেলে ওই মনিটারিং কমিটিকে উপেক্ষা করে তিনি কিছুই করতে পারবেন না। এরপরে সাময়িক ছেদ পড়ে সেই বিবাদে। কিন্তু সময় যতই গড়িয়েছে দেখা গিয়েছে দলের মনিটারিং কমিটির দাওয়াইও ধোপে টিকছে না। ফলে ফের বিরোধ সামনে চলে এসেছে এখন।

শনিবারের ওই বৈঠকে উপস্থিত জেলা পরিষদের এক সদস্য বলেন, ‘‘জেলা পরিষদের কাজের সঙ্গে দলের কোনও সমন্বয়ই নেই। তার ফলে জেলা পরিষদের কাজ নিয়ে দলের স্থানীয় সদস্য এবং নেতৃত্বে যাঁরা আছেন তাঁরা কিছইু জানতে পারছে না। এর জন্য নানা স্তরে ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে।’’ আর এক সদস্য বলেন, ‘‘সভাধিপতি অভিভাবকের মতো। কিন্তু পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির নানা স্তরে যে সব অনাস্থা আসছে, জট খোলার বদলে তিনি তা পাকিয়ে দিচ্ছেন। গোঘাট পঞ্চায়েত সমিতিতে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেখানে সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়েছে।’’

Advertisement

মেহবুব রহমান বলেন, ‘‘জেলা পরিষদের সদস্যদের মধ্যে কেউ কেউ আমাদের কাজকে কালিমালিপ্ত করতে নানা প্ররোচনায় দিচ্ছে। আমরা সেই ফাঁদে পা দেব না।’’ মুকুল রায় বলেন, ‘‘জেলা পরিষেদর কাজে গতি আনতে আমরা একটা কোর কমিটির বৈঠকে বসেছিলাম। গোঘাট সঞ্চায়েত সমিতিতে একটা সমস্যা আছে। আগামী ১৩ তারিখ সমস্যা সমাধানে ফের বৈঠকে বসব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন