আগামী মাস থেকেই হাওড়ায় ‘সবুজশ্রী’

ঘোষণা হয়েছে গত অগস্টে। আগামী মাস থেকে হাওড়া জেলায় চালু হয়ে যাচ্ছে ‘সবুজশ্রী’। কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী-র পরে রাজ্য সরকারের ‘সবুজশ্রী’ প্রকল্পটি নবজাতকদের জন্য। যেখানে গ্রামের বাড়ির নবজাতক উপহার পাবে একটি বৃক্ষ-শিশু। একই সঙ্গে বেড়ে উঠবে দু’জনে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৬ ০১:০৭
Share:

ঘোষণা হয়েছে গত অগস্টে। আগামী মাস থেকে হাওড়া জেলায় চালু হয়ে যাচ্ছে ‘সবুজশ্রী’।

Advertisement

কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী-র পরে রাজ্য সরকারের ‘সবুজশ্রী’ প্রকল্পটি নবজাতকদের জন্য। যেখানে গ্রামের বাড়ির নবজাতক উপহার পাবে একটি বৃক্ষ-শিশু। একই সঙ্গে বেড়ে উঠবে দু’জনে। পরে প্রাপ্তবয়স্ক গাছটি সহায় হবে তরুণ-তরুণীর। গাছটি বিক্রি করে তাঁরা একসঙ্গে বেশ কিছু টাকার সংস্থান করতে পারবেন। তবে, ‘সবুজশ্রী’র এই উপহার সবার জন্য নয়। সন্তানের জন্ম যদি কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হয় (যাকে সরকারি ভাবে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব বলে), তবেই মিলবে অর্থকরী গাছের (শাল, সেগুন, মেহগনি ইত্যাদি) ওই চারা।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়ায় এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে নভেম্বর মাস থেকে। জেলার গ্রামীণ এলাকায় রয়েছে মোট ১৪টি ব্লক। ব্লকগুলিতে এখন এই সংক্রান্ত ততপরতা তুঙ্গে উঠেছে। স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক হচ্ছে ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের। প্রতিটি ব্লকে নির্দিষ্ট জায়গার সংস্থান করতে হচ্ছে গাছের চারা রাখার জন্য। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, প্রতিটি ব্লকে গড়ে মাসে ১০০টি করে শিশু জন্মায়। সেই হিসেবে মাসে এই জেলায় গড়ে ১৪০০ করে শিশুর জন্ম হয়। মোট ১৪০০ করে চারার প্রয়োজন হবে মাসে।

Advertisement

বছর কুড়ি আগে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের আমলে গাছের চারা বিতরণের প্রকল্প থাকলেও তার পরিধি বেশি ছিল না। সেই প্রকল্পে বলা ছিল, মনে করলে কন্যাসন্তানের বাবারা বন দফতরের কাছ থেকে মেহগনি চারা আনতে পারেন। মেয়েটির যখন বিয়ের বয়স হবে, তখন সেই চারাও পরিণত হবে গাছে। সেই গাছ বিক্রি করে মেয়ের বিয়ের খরচ মেটানো যাবে। কিন্তু ‘সবুজশ্রী’ প্রকল্পটি বাধ্যতামূলক করেছে প্রশাসন। শুধু সদ্যোজাত কন্যাসন্তানদের জন্য নয়, পুত্রসন্তানদেরও এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। কারণ হিসেবে এক সরকারি কর্তা জানান, শুধুমাত্র কন্যাসন্তান বড় হলে তার বিয়ের খরচ যেমন আছে, অন্যদিকে খরচের অভাবে তার উচ্চশিক্ষা যাতে ব্যাহত না হয়, সেটাও দেখা প্রয়োজন। অন্য দিকে, পুত্রসন্তানদের পড়াশোনার খরচও বেড়েছে। সব মিলিয়ে গাছটি বড় হলে দু’জনের কাজেই লাগবে। সেই সময় গাছ কাটতে গেল বন দফতরের কাছ থেকে যাতে কোনও অনুমতি না নিতে হয়, সে ব্যবস্থাও করে রাখছে সরকার। গাছের চারা বিতরণের সময়েই সদ্যোজাতের বাবার হাতে তুলে দেওয়া হবে গাছ কাটা সংক্রান্ত বন দফতরের আগাম শংসাপত্র।

প্রতি মাসে কত শিশু সরকারি হাসপাতালগুলিতে জন্ম নিচ্ছে, তার নিয়মিত রিপোর্ট ব্লক প্রশাসনের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে। তা ছাড়া, গ্রাম পঞ্চায়েতের সদর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্বাস্থ্য দফতরের উপকেন্দ্রগুলি থেকেও নিয়মিত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। কাজে লাগানো হবে আশাকর্মীদের। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে সদ্যোজাতের বাবার নাম ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বর জোগাড় করে তা –ও পাঠাতে হবে।

রাজ্যের বন দফতরের এক কর্তা জানান, সদ্যোজাতের পরিবারের লোককে ডেকে চারা বিতরণ করতে হবে প্রতি মাসে। চারার জোগান দেবে বন দফতরই। তবে তা রাখার জন্য প্রতিটি ব্লক প্রশাসন কার্যালয়ে নির্দিষ্ট জায়গার সংস্থান করতে বলা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement