প্রতিশ্রুতি: পড়ুয়াদের সাইকেল বিলি মুখ্যমন্ত্রীর। শুক্রবার তারকেশ্বরের সভায়। ছবি: দীপঙ্কর দে
তালিকায় ছিল হুগলি-সহ কয়েকটি জেলার একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস। কিন্তু শুক্রবার তারকেশ্বরের বালিগোড়িতে পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমেই এখানে প্রস্তাবিত ‘গ্রিন ইউনিভার্সিটি’র শিলান্যাস করলেন। জানিয়ে দিলেন প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নামও।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন,‘‘রানি রাসমণির নামে আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয় উৎসর্গ করছি। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে আশুতোষ ঘোষকে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প রচনা হয়ে গিয়েছে।’’
এ দিন দুপুর তিনটে দশ মিনিটে মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা থেকে সরাসরি হেলিকপ্টারে তারকেশ্বরে আসেন। তারপর হেলিপ্যাড লাগোয়া মঞ্চে উঠে যান। মুখ্যমন্ত্রীর সভাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মধ্যে উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিভিন্ন দফতরের সচিবরা। লোকসভা নির্বাচনের মুখে এ দিন মমতা যেন কল্পতরু!
মঞ্চ থেকে তিনি আরামবাগ ও বারাসতের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিলান্যাস করেন। এর সঙ্গেই উলুবেড়িয়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল চালু হচ্ছে বলে জানান। শ্রীরামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের বর্হিবিভাগেরও সূচনা করেন তিনি। মাটি নিয়ে তাঁর আবেগের কথা বলতে গিয়ে তিনি তাঁরই একটি কবিতাও শোনান। সিঙ্গুরের জেলা হুগলিতে এসে তিনি চাষিদের জমি ফেরত দিতে পেরে তাঁর তৃপ্তির কথাও বলেন।
কেন্দ্রের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পকে এ দিনও বিঁধেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, ‘‘ওই প্রকল্প বাতিল। ওটা ভাঁওতা। এ রাজ্যে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পই চলবে। তাতে বাড়তি ৯২৫ কোটি টাকা লাগবে। দারিদ্রসীমার নীচে থাকা সব মানুষই তার সুবিধা পাবেন। আমাদের সরকার ‘স্মার্ট কার্ড’ বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেবে। সেই কার্ড শুধুমাত্র বাড়ির মহিলাদের নামে হবে। মহিলারা সেই কার্ডে তাঁর বাবা-মাকেও যুক্ত করতে পারবেন।’’ মুখ্যমন্ত্রী সভার মধ্যেই একটি কার্ড তুলে ধরে উপস্থিত মানুষজনকে দেখান। চন্দননগরে আলোকশিল্পীদের জন্য আলো-হাবের কথা তিনি এ দিন মনে করিয়ে দেন। আরামবাগের মতো বন্যাপ্রবণ এলাকার মানুষের জন্য তিনি সুখবর শোনান। সেখানে বন্যা প্রতিরোধে তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্দিষ্ট প্রকল্পের কথা তুলে তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্র কথা দিলেও বন্যা প্রতিরোধে কিছু না-করায় রাজ্য সরকার করবে।’’
দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা-সহ কয়েকটি জেলার নানান প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাসও ওই মঞ্চ থেকে করেন মমতা। একই সঙ্গে সূচনা করেন রাজ্যের মাটি উৎসবেরও।