শেওড়াফুলির হাটে শিকেয় অগ্নিবিধি

ঘুপচি গলির দু’ধার জুড়ে সার দিয়ে ছোট ছোট দোকান। গোটা চৌহদ্দি জুড়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়ে হাঁটার জো নেই। প্লাস্টিকের ছাউনির তলায় বিরাম নেই বেচাকেনার।

Advertisement

প্রকাশ পাল

শেওড়াফুলি শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৭ ০২:২৯
Share:

বিকিকিনি: নেই ছাউনি। প্লাস্টিকের চাদরের নীচে চলছে বাজার। রবিবার ছবি তুলেছেন দীপঙ্কর দে

ঘুপচি গলির দু’ধার জুড়ে সার দিয়ে ছোট ছোট দোকান। গোটা চৌহদ্দি জুড়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়ে হাঁটার জো নেই। প্লাস্টিকের ছাউনির তলায় বিরাম নেই বেচাকেনার।

Advertisement

বছরের পর বছর, দশকের পর দশক এমন ভাবেই ব্যবসা চলে আসছে হুগলির ব্যস্ততম শেওড়াফুলি হাটে। কলেবরে, ব্যবসার পরিমাণে জেলার অন্যতম বড় এই বাজারে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা কার্যত নেই বললেই চল‌ে।

ব্যবসায়ীদের একাংশের বক্তব্য, অতীতে একাধিক বার এই বিষয় নিয়ে নাড়াচাড়া বয়েছে। দাবি উঠেছে বাজারে অগ্নিবিধি তৈরির। এক-আধবার আলোচনাও হলেও আজ পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি। হাটের এক পাশে শেওড়াফুলি স্টেশন। আর এক পাশে গঙ্গা। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত এই হাট সরগরম থাকে। কাঁচা আনাজের বড় ব্যাপারিদের গুদাম রয়েছে। স্থায়ী দোকানও আছে প্রচুর। এর পাশাপাশি কয়েকশো মানুষ প্লাস্টিক টাঙিয়ে ডালা নিয়ে আনাজ বিক্রি করেন। এ ছাড়াও রয়েছে গোলদারি ব্যবসা। প্রচুর মুদিখান‌া রয়েছে। হাটের মধ্যেই রয়েছে মালপত্র রাখার গুদাম। অপরিসর হাটে দিনের পর দিন প্লাস্টিক ও নানা দাহ্য বস্তুর যে ভাবে সহাবস্থান চলে আসছে তাতে যে কোনও সময়েই আগুন লাগার আশঙ্কা রয়েছে।

Advertisement

ছোট জায়গার মধ্যেই ওই এলাকায় বেশ কিছু বাড়িও আছে। তার মধ্যেই রাস্তার দু’ধারে বসে বাজার বসে। পুর কর্তৃপক্ষের একাংশের বক্তব্য, রোদ-বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে বহু ব্যবসায়ী বা চাষির কাছে প্লাস্টিকই ভরসা। স্থানীয় কংগ্রেস কাউন্সিলর বলরাম ঘোষ বলেন, ‘‘শেড করলে নানা রকম সমস্যা হবে। সেই কারণে এমনটাই চ‌লে আসছে।’’ তবে বলরামবাবুর দাবি, ‘‘কিছুটা অসুবিধা হলেও দমকলের গাড়ি এখানে ঢুকতে পারে। সে ক্ষেত্রে রাস্তা ফাঁকা করে দিতে হয়।’’

এক আনাজ ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘অগ্নি নির্বাপণ নিয়ে দমকল বা কৃষি বিপণন দফতরের তরফে কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি। এ ব্যাপারে গাইডলাইন থাকলে তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা হবে।’’

কৃষি বিপণন পর্যদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান নরেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অবিলম্বে হাটে অগ্নিসুরক্ষা বিধি পালনের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত দমকল কর্তৃপক্ষের।’’

এ ভাবে হাট চলায় কী বলছেন দমকল আধিকারিকরা?

দমকলের এক আধিকারিক জানান, ঘিঞ্জি রাস্তা আর হাটের অপরিসর চৌহদ্দিতে দমকলের ছোট গাড়ি ঢুকলেও বড় গাড়ি ঢোকা খুবই কষ্টকর। সে ক্ষেত্রে বড় আগু‌ন লাগলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে বেজায় সমস্যা হবে। এই পরিস্থিতিতে বড় দোকানে বা গুদামে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা থাকা দরকার বলে তাঁরা মনে করেন।

বৈদ্যবাটির পুরপ্রধান অরিন্দম গুঁইনের আশ্বাস, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আগামী দিনে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন