coronavirus

উত্তরপাড়ায় বাড়ছে সংক্রমণ, থানায় গেলে ‘গান’ ধরছেন উর্দিধারী

শ্রীরামপুর থেকে পান্ডুয়া— চন্দননগর কমিশনারেট থেকে হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের আওতাধীন বিভিন্ন থানাতে একই বন্দোবস্ত।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২০ ০৪:০৮
Share:

সিঙ্গুর থানার প্রধান ফটক বন্ধ (বাঁ দিকে)। ছবি: দীপঙ্কর দে। পান্ডুয়া থানায় ঢোকার মুখে থার্মাল গান দিয়ে পরীক্ষা করছেন পুলিশকর্মী। ছবি: সুশান্ত সরকার

থানা তো নয়, যেন দুর্গ!

Advertisement

বন্ধ গেট খুলে থানায় ঢুকলেই কপালে ঠেকানো হচ্ছে ‘গান’। অভিযোগকারী থেকে অভিযুক্ত—সকলের।

ওই ‘গান’ দিয়ে গুলি বেরোয় না। শরীরের তাপমাত্রা মাপা হয়। পোশাকি নাম ‘থার্মাল গান’। থানার অন্দরে করোনা সংক্রমণ রোধে এটাই এখন পুলিশের মূল অস্ত্র। পাশাপাশি স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাতও ধুতে হচ্ছে সকলকেই।

Advertisement

শ্রীরামপুর থেকে পান্ডুয়া— চন্দননগর কমিশনারেট থেকে হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের আওতাধীন বিভিন্ন থানাতে একই বন্দোবস্ত। কোথাও আবার স্যানিটাইজ়ার টানেল দিয়ে ঢুকতে হচ্ছে থানায়। আর, মাস্ক না-পরে থাকলে পত্রপাঠ বিদায়। মাস্কবিহীন জনতাকে বেজায় ভয় উর্দিধারীদের।

কয়েক বছর আগে শ্রীরামপুর থানায় ঘাঁটি গেড়েছিল ডেঙ্গি। মশার ভয়ে তটস্থ হয়ে গিয়েছিলেন পোড়খাওয়া দারোগারাও। এ বার করোনার আক্রমণ ঠেকাতে তাঁরা কোমর বেঁধেছেন। চন্দননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, ওই থানায় ইতিমধ্যেই তিন জন পুলিশকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। সংক্রমণ যাতে না-ছড়ায়, সে জন্য স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত ধুয়ে এবং শরীরের তাপমাত্রা মেপে তবেই ঢোকা যাচ্ছে থানায়। এক জনের বেশি প্রবেশ নিষেধ। তিনি বেরিয়ে এলে তবেই পরের জন ঢুকতে পারছেন।

কিছুটা দূরে শ্রীরামপুর মহিলা থানা। সেখানেও দু’জন করোনায় আক্রান্ত হন। সেখানে গেট ভেজানো থাকছে। প্রয়োজন মিটিয়ে কেউ বেরিয়ে গেলে চেয়ার স্যানিটাইজ় করে নেওয়া হচ্ছে। শুধু শ্রীরামপুর নয়, উত্তরপাড়া, ডানকুনি এবং কানাইপুর ফাঁড়ির পুলিশ কর্মীদেরও করোনা সংক্রমণের খবর মিলেছে চন্দননগর কমিশনারেট সূত্রে।

চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর রবিবার বলেন, ‘‘আমরা খুবই উদ্বেগের মধ্যে আছি আক্রান্ত পুলিশকর্মী এবং অফিসারদের নিয়ে। প্রত্যেকেই কোয়রান্টিনে আছেন। চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। অন্য পুলিশকর্মীদের দিয়ে থানার কাজ চালানো হচ্ছে।’’

জমি-আন্দোলন পর্বে বহু ঝড়ঝাপ্টা সামলেছে সিঙ্গুর থানা। কখনও-সখনও আন্দোলনকারীদের ঠেকাতে বন্ধ থেকেছে থানার বড় গেট। এখন বন্ধ করোনার ঠেলায়। কোনও প্রয়োজনে থানায় ঢুকতে গেলে ছোট গেট দিয়ে ঢুকতে হবে। তার পরে হাত ধোওয়ার পালা তো আছেই। কী দরকারে প্রবেশ, তা নিয়ে ‘সান্ত্রী’র প্রশ্নের মুখেও পড়তে হচ্ছে।

পান্ডুয়া থানায় ‘স্যানিটাইজ়ার টানেল’ দিয়ে ঢুকে থার্মাল গানের মুখে পড়তে হচ্ছে। এক পুলিশকর্তার রসিকতা, ‘‘যেন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি। মেটাল ডিটেক্টরের বদলে স্যানিটাইজ়ার টানেল। বন্দুকের বদলে থার্মাল গান। এটাই যা তফাত!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement