চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ

প্রসূতির মৃত্যুতে ভাঙচুর নার্সিংহোমে

প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর হল ‌নার্সিংহোম। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ধনেখালিতে। সুপর্ণা বাগ (২০) নামে মৃত মহিলার স্বামী নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ এনেছেন। মৃতের পরিবারের তরফে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক রূপক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ধনেখালি শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:০৭
Share:

সুপর্ণা বাগ (২০)।নিজস্ব চিত্র।

প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর হল ‌নার্সিংহোম। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ধনেখালিতে। সুপর্ণা বাগ (২০) নামে মৃত মহিলার স্বামী নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ এনেছেন। মৃতের পরিবারের তরফে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক রূপক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পাল্টা ভাঙচুরের অভিযোগ দায়ের করেছেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। পুলিশ জানিয়েছে দু’টি অভিযোগই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

পুলিশ ও মৃতার পরিবার সূত্রে খবর, ধনেখালির বান্না এলাকার বাসিন্দা সুপর্ণাদেবী রবিবার রাত ১০টা নাগাদ প্রসবযন্ত্রণা নিয়ে নারায়ণপুর এলাকার এক নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন। ওই রাতেই অস্ত্রোপচার করে তাঁর প্রসব করানোর সিদ্ধান্ত নেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। সেইমত সুপর্ণা দেবীর যাবতীয় পরীক্ষা করা হয়েছিল। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি, রোগীর রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার ফলে অস্ত্রোপচারের আগেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। এর পরেই সুপর্ণাদেবীর বাড়ির লোকজন চিকিৎসক তথা ওই নার্সিংহোমের মালিক রূপক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান।

সুপর্ণাদেবীর মৃত্যুর খবর শুনে নার্সিংহোমে জড়ো হন তাঁর গ্রামের লোকজন। মৃতার শ্বশুরবাড়ি পুরশুড়া থেকেও লোকজন চলে আসেন। নার্সিংহোম কতৃর্পক্ষের অভিযোগ, তাঁদের কোনও কথা শুনতে না চেয়ে রোগীর বাড়ির লোকজন ভাঙচুর শুরু করে। বাদ যায়নি অপারেশন থিয়েটারও। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উত্তেজিত জনতা মৃতদেহ আটকে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে গ্রেফতারের দাবি জানাতে থাকে। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠায়। মৃতার স্বামী সুজিত বাগ অভিযোগ করেন, ‘‘নার্সিংহোমের গাফিলতিতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর স্ত্রীর। চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনও পরীক্ষা না করেই তাঁর স্ত্রীর অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ।’’ যদিও সুপর্ণাদেবীর চিকিৎসায় যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল বলে নার্সিংহোম কতৃর্পক্ষ জানান।

Advertisement

রূপকবাবু বলেন, ‘‘গর্ভস্থ অবস্থায় সুপর্ণাদেবীকে এখানে চিকিৎসা করানো হয়নি। তবে রবিবার রাতে ভর্তি হওয়ার পর অস্ত্রোপচারের আগে সমস্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছিল। পরীক্ষায় ধরা পড়ে, গর্ভস্থ শিশু যে অবস্থায় রয়েছে তাতে শিশুকে বাঁচাতে গেলে মায়ের মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা সে কথা রোগীর পরিবারের সদস্যদের জানাই। কিন্তু তাঁরা কোনও কথাই শুনতে চাননি। শেষ পর্যন্ত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীর মৃত্যু ঘটে।’’

দিন দুয়েক আগেই কলকাতার সিএমআরআই-এ রোগীর মৃত্যুকে করে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। তারপরেই ফের এমন ঘটনায় আতঙ্কিত চিকিৎসকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন