বীরশিবপুরে গরুহাটে চলছে বেচাকেনা। নিজস্ব চিত্র।
চরিত্রে এক। অথচ নিয়ম দু’রকম। আর তা নিয়েই গোলমালের জেরে দু’বছর ধরে রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে রাজ্য সরকারের। যাকে কেন্দ্র করে এ সব সেটা হল উলুবেড়িয়ার বীরশিবপুরের গরুহাট।
নিয়মমতো গরুহাট চালাতে গেলে সরকারের অনুমতি প্রয়োজন। যে জন্য রাজস্ব পায় সরকার। এতদিন সে ভাবে চললেও গোলমালের জেরে দু’বছর ধরে বিনা অনুমতিতেই চলছে হাট। ফলে উলুবেড়িয়ার গরুহাট বাবদ কোনও টাকা পড়ছে না সরকারের ভাঁড়ারে।
নিয়ম মতো গরুহাট চালাতে অনুমতি দেয় রাজ্য বিপণন পর্ষদ। বিনিময়ে তারা একটা নির্দিষ্ট টাকাও পায়। এতদিন সে ভাবে চললেও গোলমাল বাধে ২০১৫ সালে পর্যদ রাজস্ব আদায়ের নতুন নীতি নেওয়ায়। প্রতিদিনের ওই গরুহাটে এতদিন সপ্তাহে ২০ হাজার টাকা পর্ষদকে দিতেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু নতুন নিয়মে পর্ষদ ঠিক করে প্রতিদিন হাটে মোট যে পরিমাণ টাকার ব্যবসা হবে তার ১ শতাংশ হারে রাজস্ব দিতে হবে। টাকা আদায়ের জন্য একটি বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেয় পর্ষদ। আর এতেই বেঁকে বসেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা নতুন হারে টাকা দিতে অস্বীকার করেন। সংস্থার লোকজন রাজস্ব আদায়ে এলে তাঁদের মারধরেরও ঘটনা ঘটে। এই অবস্থায় বন্ধ হয়ে যায় রাজস্ব আদায়। পরিণামে ব্যবসায়ীরা পুরনো হারে কর দিতে গেলে তা নিতে অস্বীকার করে পর্ষদ। এমনকী ব্যবসায়ীদের লাইসেন্সও পুনর্নবীকরণ করতে অস্বীকার করে তারা। এরপরেও বিনা অনুমতিতেই চলতে থাকে হাট।
গরুহাটের মালিক আসপিয়ার আলি বলেন, ‘‘রাজ্যে ডেবরা, খড়্গপুর প্রভৃতি এলাকাতেও গরুহাট আছে। কিন্তু কোথাও এত টাকা রাজস্ব নেওয়া হয় না। তা হলে বীরশিবপুরে কেন নেওয়া হবে? আমরা শেষ পর্যন্ত গরুপ্রতি ২০ টাকা করে দিতে রাজি ছিলাম। কিন্তু পর্ষদ রাজি হয়নি।’’
পর্ষদ সূত্রে খবর, রাজ্যে ৩০টির মতো গরুহাট আছে। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন হারে রাজস্ব আদায় করে পর্ষদ। একমাত্র বীরশিবপুরে নিয়ম মেনে মোট কেনাবেচার ১ শতাংশ হারে রাজস্ব আদায় শুরু করা হচ্ছিল। অন্য হাটগুলিতে এখনও এটা চালু হয়নি। পর্ষদের এক কর্তার মতে, দু’রকম নীতির কারণেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। উলুবেড়িয়ার গরুহাটের সমস্যা মেটাতে রাজ্যের সব গরুহাটে যাতে একই হারে রাজস্ব আদায় করা যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।