কলেজ জমি ‘দখল’, অভিযুক্ত সভাপতিও

তাঁর দাবি, “কলেজ লাগোয়া প্রাচীর সমেত বাড়িটা আমরা কিনি। বন্যায় প্রাচীরটা ভেঙে গিয়েছিল। পুরসভা থেকে নির্মাণের মৌখিক ছাড়পত্র পেয়ে ভাঙা প্রাচীরই নতুন ভাবে গড়া হয়। কলেজের জায়গা দখল করা হয়নি।”

Advertisement

পীযূয নন্দী

আরামবাগ শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:০৭
Share:

বিতর্ক: কলেজের জমি দখল করে এই পাঁচিল তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

বাড়ির প্রাচীর নির্মাণের জন্য আরামবাগ গার্লস কলেজের জমি দখলের অভিযোগ উঠল তৃণমূল ঘনিষ্ঠ চালকল-মালিক দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে। কলেজ কর্তৃপক্ষের একাংশের ক্ষোভ আরও বেড়েছে ঘটনায় কলেজ সভাপতি তথা আরামবাগের পুরপ্রধান স্বপন নন্দীর ভূমিকায়। অভিযোগ, ওই দখলে স্বপনবাবু মদত দিয়েছেন।

Advertisement

কলেজ পরিচালন সমিতির অনেকেরই প্রশ্ন, সভাপতি হয়েও কলেজের সম্পত্তি না-বাঁচিয়ে স্বপনবাবু চালকল-মালিকের অবৈধ নির্মাণে মদত দিলেন কেন? অধ্যক্ষ সৈয়দ সাজিদুল ইসলাম বলেন, “নিয়মমতো চার ফুট ছাড় না-রেখে কলেজের জমি দখল করার বিষয়টি থানায় এবং পুরসভায় জানানো হয়েছিল। কোনও পদক্ষেপ হয়নি। পরিচালন সমিতির বৈঠক ডাকারও সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু রাতারাতি নির্মাণ সম্পূর্ণ করে ফেলা হয়।”

অভিযোগ মানেননি কলেজ সভাপতি স্বপনবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘কলেজের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে একদফা কাজ বন্ধ রাখা হয়েছিল। দু’পক্ষের কাগজপত্র দেখতে চাওয়া হয়েছিল। কলেজ তাদের জমি সংক্রান্ত নথি দেখাতে পারেনি। কিন্তু চালকল-মালিকের জমি সংক্রান্ত নথি এবং জায়গার ছাড় ঠিক থাকায় পুরপ্রধান হিসেবে প্রাচীরের কাজে আপত্তি করা হয়নি।”

Advertisement

কলেজের জমি দখলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন চালকল-মালিক শেখ মোসারফ হোসেনও। তাঁর দাবি, “কলেজ লাগোয়া প্রাচীর সমেত বাড়িটা আমরা কিনি। বন্যায় প্রাচীরটা ভেঙে গিয়েছিল। পুরসভা থেকে নির্মাণের মৌখিক ছাড়পত্র পেয়ে ভাঙা প্রাচীরই নতুন ভাবে গড়া হয়। কলেজের জায়গা দখল করা হয়নি।”

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এক ব্যবসায়ীর দানের জমিতে ১৯৯৫ সালে কলেজটি তৈরি হয়। গত জুলাই মাসের বন্যায় দ্বারকেশ্বর নদীর বাঁধ ভাঙা জলস্রোত কলেজের সীমানা-প্রাচীরের অনেকটাও ভেঙে দেয়। জল উঠে যায় একতলা পর্যন্ত। কলেজের ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখে মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিকরা ভাঙা প্রাচীর সংস্কারের সুপারিশ পাঠান রাজ্য প্রশাসনের কাছে। কিন্তু সেই কাজ এখনও শুরু হয়নি। তার আগেই সম্প্রতি কলেজের পূর্ব দিকের মূল ফটকের গায়ে নিজের বাড়ির প্রাচীর দেওয়ার কাজ শুরু করেন শেখ মোসারফ হোসেনরা।

কলেজ কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি, “চালকল-মালিকদের বাড়িতে প্রাচীরই ছিল না। কলেজ প্রাচীরই বাড়ির পশ্চিমের প্রাচীর হিসাবে ব্যবহার হচ্ছিল। দিন কুড়ি আগে সেই প্রাচীর থেকে প্রায় দেড় ফুট কলেজের জায়গা দখল করে মিল-মালিকেরা প্রাচীর নির্মাণ করতে গেলে আপত্তি জানানো হয়।”

কিন্তু পুরসভার কাছে কেন জমি সংক্রান্ত নথি দেখাতে পারলেন না কলেজ কর্তৃপক্ষ? পরিচালন সমিতির কয়েকজন জানান, দানের জমিটির পরচা থাকলেও দলিল হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন