বাজেট-বিতর্কে বিতণ্ডা। সোমবার, হাওড়া পুরসভায়। নিজস্ব চিত্র
বাজেট-বিতর্কে বিরোধীদের কিছু বলতে দেওয়া হয়নি, এই অভিযোগকে ঘিরে সোমবার বিকেলে তুলকালাম ঘটে গেল হাওড়া পুরসভায়। বিজেপি-র তরফে দলীয় কাউন্সিলরকে ‘লাঞ্ছনা’ করার অভিযোগে কয়েকশো মহিলা ও পুরুষ পুরসভার সামনে রাস্তা অবরোধ করেন। পাশাপাশি, তাঁদের বলতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তুলে সিপিএম কাউন্সিলরেরাও কক্ষত্যাগ করেন। যদিও তৃণমূল-শাসিত হাওড়া পুরসভার কর্তাদের দাবি, তাঁদের দীর্ঘ কাজের খতিয়ান যাতে শুনতে না হয়, তার জন্যই বিরোধীরা কক্ষত্যাগ করেছেন। তাঁদের কেউ লাঞ্ছনা করেনি।
হাওড়া পুরসভায় এ দিন ছিল ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরের বাজেট নিয়ে বিতর্ক। হাওড়ার মোট ৬৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬২টি তৃণমূলের। মাত্র চারটি রয়েছে বিরোধীদের দখলে।
তার মধ্যে দু’টি বিজেপির দখলে, বাকি দু’টি সিপিএমের। এ দিনের বাজেট-বিতর্কে অংশ নিয়ে প্রথমেই বলতে ওঠেন ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর অনিতা সিংহ। তিনি অভিযোগ করে বলেন, হাওড়াকে পাল্টে দেওয়ার যে দাবি পুরসভা করছে, আসলে তার কিছুই হয়নি। কাজের থেকে চুরি হয়েছে বেশি। এ কথা বলার পরেই তৃণমূলের কাউন্সিলরেরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তাঁরা অনিতাদেবীকে ঘিরে চিৎকার করতে শুরু করেন। মেয়র পারিষদ গৌতম চৌধুরী, শ্যামল মিত্র, ভাস্কর ভট্টাচার্য, বিভাস হাজরা-সহ বালির কয়েক জন কাউন্সিলরও আসন ছেড়ে উঠে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। কিছু ক্ষণ এ ভাবে চলার পরে পুর চেয়ারম্যান অরবিন্দ গুহ মাইক বন্ধ করে দেন। শেষ পর্যন্ত দুই বিরোধী কাউন্সিলরই অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করে পুরসভার অ্যানেক্স বিল্ডিং-এর নীচে চলে যান। এর পরেই পুরসভার সামনে মহাত্মা গাঁধী রোড অবরোধ করে দলীয় কাউন্সিলরকে লাঞ্ছনা করা হয়েছে বলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন কয়েকশো মহিলা ও পুরুষ। তবে আধ ঘণ্টা পরেই অবরোধ উঠে যায়।
একই পরিস্থিতি হয় সিপিএমের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আশরাফ জাভেদ বাজেট-বিতর্কে অংশ নিতে উঠলে। শেষে বক্তৃতা থামিয়ে আর এক দলীয় কাউন্সিলরকে নিয়ে কক্ষত্যাগ করেন তিনি। হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বিরোধীদের অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়ে বলেন, ‘‘কাউকে লাঞ্ছনা করা হয়নি। আমরা পাঁচ বছরে এত কাজ করেছি যে, তার পরিসংখ্যান যাতে শুনতে না হয়, তাই এই নাটক। এই পুরবোর্ড বিরোধীদের ওয়ার্ডেও সমান গুরুত্ব দিয়ে কাজ করেছে।’’