জয়ের পর মিছিল বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। নিজস্ব চিত্র
ছবিটা বদলে গেল জোয়ারগড়িতে!
হানাহানি নেই। বোমাবাজি নেই। পরস্পরের প্রতি কটূক্তিও নেই। যেন উৎসবের আবহ! কিছুটা তফাতে দু’পক্ষ আবির ওড়াচ্ছে!
পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনকে ঘিরে ক’দিন আগেই তেতে উঠেছিল হাওড়ার শ্যামপুর-১ ব্লকের ধান্ধালি এবং উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের তুলসিবেড়িয়া পঞ্চায়েত। তৃণমূল ও বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের একাংশ পরস্পরকে লক্ষ করে বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। কিন্তু বুধবার উলুবেড়িয়া-২ ব্লকেরই জোয়ারগড়ি পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনকে ঘিরে দু’পক্ষের মধ্যে যেন বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থান! টসে জিতে প্রধান হলেন বিজেপির মথুর ভুঁইয়া। উপপ্রধান তৃণমূলের মানিক মাখাল।
গোলমালের আশঙ্কায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল গ্রামের প্রতিটি মোড়ে। কিন্তু গোলমাল না-হওয়ায় দিনের শেষে পুলিশ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। গ্রামবাসীরাও চাইছেন, আগামী দিনগুলিতেও এলাকায় যেন শান্তি বজায় থাকে। যুযুধান দুই দলের নেতাদের মুখেই শোনা গিয়েছে শুধু উন্নয়নের কথা।
জোয়ারগড়ি পঞ্চায়েতের মোট আসন ১৬। তৃণমূল এবং বিজেপি ৮টি করে আসন পেয়েছে। অর্থাৎ, ফলাফলের নিরিখে এই পঞ্চায়েত ‘টাই’ হয়েছে। কিন্তু কোনও পক্ষই বোর্ড গঠনের জন্য অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে কাউকে ভাঙিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তোলেনি। শুধু ২৮ অগস্টের পরিবর্তে বোর্ড গঠনের দিন পিছিয়ে যাওয়ায় কিঞ্চিৎ ক্ষোভ প্রকাশ করে বিজেপি।
এ দিন দু’দলের কর্মী-সমর্থকেরা দু’টি আলাদা জায়গায় জড়ো হয়েছিলেন। পঞ্চায়েত অফিসের কাছে তাঁদের ঘেঁষতে দেয়নি পুলিশ। শুধুমাত্র পরিচয়পত্র দেখে নির্বাচিত সদস্যদেরই পঞ্চায়েত অফিস পর্যন্ত আসতে দেওয়া হয়। টস হয়ে যাওয়ার পরে প্রধান এবং উপপ্রধান দলীয় সদস্যদের নিয়ে হাসতে হাসতে বেরিয়ে আসেন। তারপরে যে যাঁর পক্ষের দিকে ভাগ হয়ে যান। আলাদা আলাদা ভাবে তৃণমূল এবং বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা আবির খেলায় মেতে ওঠেন। তবে আবিরের রং আলাদা হলেও দু’পক্ষেরই উচ্ছ্বাসের ধরন ছিল একই রকম।
উন্নয়নমূলক কাজেও কী এই একতা দেখা যাবে? বিজেপির গ্রামীণ জেলা সভাপতি অনুপম মল্লিক বলেন, ‘‘আমাদের দিক থেকে সহযোগিতার কোনও অভাব থাকবে না। প্রধান কোনও দলের হন না। তিনি সকলের। আমরা তাঁকে নির্দেশ দেব, উন্নয়নের কাজে তিনি যেন রং না দেখেন।’’ অন্যদিকে হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূল সভাপতি পুলক রায়ও বলেন, ‘‘আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। প্রধান এবং উপপ্রধান আলাদা দলের হলেও উন্নয়নমূলক কাজে তার কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই মনে করি।’’