কী বললেন সভাপতি! হতাশ পান্ডুয়া

পান্ডুয়া জুড়ে চম্পাদেবীর ওই দাবি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। বিরোধীরা তো বটেই, এলাকার শাসকদলের নেতাদের অনেকেও স্তম্ভিত। ২৪ ঘণ্টা পরে, শুক্রবারও চম্পাদেবী দাবি করেন, ‘‘আমার কিছু চাওয়ার ছিল না।

Advertisement

সুশান্ত সরকার

পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৭ ০২:৩১
Share:

বেহাল: পান্ডুয়ার তিন্না মোড় থেকে জামনা চৌমাথা পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা এখনও এমনই। —নিজস্ব চিত্র।

এলাকার অনেক রাস্তা বেহাল।

Advertisement

এখনও বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের লাইন পৌঁছয়নি।

সংস্কারের অভাবে মজে গিয়েছে একাধিক পুকুর, জলাশয়।

Advertisement

সমস্যা রয়েছে আরও। তা সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার হুগলিতে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কোনও সাহায্যের দাবি করেননি পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চম্পা হাজরা। যে বৈঠকে বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধিরা সমস্যার কথা বলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে সাহায্যের আশ্বাস পেয়েছেন, সেখানে চম্পাদেবী জানান, সাংসদ রত্না দে নাগ তাঁর এলাকায় সব উন্নয়নের কাজ করেছেন। তাঁর কোনও দাবি নেই। এতেই চমকেছেন এলাকার লোকজন। হতাশও হয়েছেন। অনেকেরই ক্ষোভ, এ কী বললেন সভাপতি!

পান্ডুয়া জুড়ে চম্পাদেবীর ওই দাবি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। বিরোধীরা তো বটেই, এলাকার শাসকদলের নেতাদের অনেকেও স্তম্ভিত। ২৪ ঘণ্টা পরে, শুক্রবারও চম্পাদেবী দাবি করেন, ‘‘আমার কিছু চাওয়ার ছিল না। রাস্তা সংস্কার বা পানীয় জলের সংযোগ-সহ উন্নয়নের যে সব কাজ বাকি রয়েছে, সেগুলির পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কিছু চাইনি।’’

দীর্ঘদিন ধরে জামনা থেকে পান্ডুয়ার তিন্না মোড় পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার রাস্তাটি বেহাল। একই ছবি আরও কয়েকটি রাস্তারও। সাধারণ মানুষকে পানীয় জল জোগাড় করতে হয় রাস্তার কল বা নলকূপ থেকে। এলাকার বহু গরিব মানুষ এখনও ‘গীতাঞ্জলি’ প্রকল্পের টাকা পাননি। এলাকার তিনটি সরকারি মাদ্রাসা শিক্ষক-সঙ্কটে ভুগছে। বিভিন্ন সরকারি স্কুলের ভবন বেহাল।

সমস্যা যেখানে এত বেশি, সেখানে কী ভাবে চম্পাদেবী উন্নয়নের সব পরিকল্পনা হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেন, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। যাবতীয় কাজের টাকাই বা কী ভাবে জোগাড় হল উঠছে সেই প্রশ্নও। নিয়ালা গ্রামের এক প্রবীণ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে এই গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নের জন্য প্রস্তাব দিতে পারতেন চম্পাদেবী। তা না করে তিনি সুযোগ হাতছাড়া করলেন।’’ তিন্না এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘উন্নয়ন হবে বলে অনেকদিন শুনছি। কিছুই তো দেখতে পাচ্ছি না। চম্পাদেবী ওই দাবি কী ভাবে করলেন!’’

পান্ডুয়ার সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেনের দাবি, ‘‘এই ব্লকে কোনও উন্নয়ন হয়নি। অথচ, চম্পাদেবী বলে দিলেন, সব কাজ হয়ে গিয়েছে!’’ চম্পাদেবীর দাবির প্রতিবাদ জানাতে শুক্রবার বিজেপির পান্ডুয়া মণ্ডলের সভাপতি দেবপ্রসাদ চক্রবর্তী বেলুন গ্রামে সভা করেন। ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি মহম্মদ নুরশোভার আক্ষেপ, ‘‘এলাকায় রাস্তা তৈরির জন্য কোনও আবেদনেই কাজ হয়নি। কী করে হবে জানি না।’’ হতাশ তৃণমূল পরিচালিত পাঁচগড়া পঞ্চায়েতের প্রধান অবোধ মালিকও। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতি থেকে অনেক ক্ষেত্রেই সাহায্য মিলছে না। জেলা পরিষদে যেতে হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন