মৃত পায়েল পাল।—ফাইল চিত্র।
দিন কয়েক আগে উলুবেড়িয়ার গৃহবধূ মিতা মণ্ডলের অপমৃত্যুর যথাযথ তদন্তের দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁর বাপেরবাড়ির লোকজন। মমতা সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ বার একই পথে হাঁটল রিষড়ার গৃহবধূ পায়েল পালের বাপেরবাড়ির লোকজনও। দুর্গাপুজোর পঞ্চমীর দিন শ্বশুরবাড়িতে পায়েলের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়।
গত শুক্রবার পায়েলের পরিজনেরা কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যান। তবে, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়নি। সেখানে থাকা অফিসারদের হাতে তাঁরা যথাযথ তদন্তের দাবি সংবলিত চিঠি তুলে দেন। পায়েলের জামাইবাবু অমিত রায় জানান, এক অফিসার তাঁদের কাছে গোটা ঘটনা মন দিয়ে শোনেন। ঘটনার সঠিক তদন্ত, দ্রুত চার্জশিট পেশ এবং সিআইডি তদন্তেরও দাবি জানানো হয়। উপযুক্ত তদন্তের ব্যাপারে ওই অফিসার তাঁদের আশ্বস্ত করেন। অমিতবাবু বলেন, ‘‘পায়েলকে যারা মেরেছে, তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই। মুখ্যমন্ত্রীর উপর আমাদের ভরসা আছে। তদন্ত সিআইডি করুক বা রাজ্য পুলিশ, তা যেন সঠিক হয়।’’ হুগলি জেলা পুলিশের দাবি, যথাযথ ভাবেই তদন্ত চলছে।
পায়েলের বাপের বাড়ি নদিয়ার ধুবুলিয়ায়। বছর দেড়েক আগে রিষড়া রেলপার্কের বাসিন্দা, একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের অফিসার কৃষ্ণেন্দু পালের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। দম্পতির ছয় মাসের একটি মেয়ে আছে। পায়েলের শ্বশুরবাড়ির লোকেরা পুলিশকে জানান, শৌচাগারে গলায় দড়ি দিয়ে পায়েল আত্মঘাতী হন। তাঁরাই তাঁকে উদ্ধার করে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। পায়েলের বাপের বাড়ির লোকজন অবশ্য আত্মহত্যার কথা মানতে চাননি। তাঁদের অভিযোগ, পায়েলকে শ্বাসরোধ করে খুন করে আত্মহত্যার নাটক করা হচ্ছে। রিষড়া থানায় এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন পায়েলের মা নমিতা হাজরা।
ঘটনার রাতেই পায়েলের স্বামী ও শ্বশুরকে পুলিশ গ্রেফতার করে। কিন্তু শাশুড়ি এবং ননদকে ধরতে পুলিশ টালবাহানা করছিল বলে অভিযোগ তোলেন পায়েলের বাপেরবাড়ির লোকজন। তাঁদের কাছেই পায়েলের মেয়ে ছিল। এ নিয়ে রিষড়া থানায় বিক্ষোভও হয়। ধুবুলিয়াতে পায়েলের বন্ধুরাও সোচ্চার হন। দিন কয়েক আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর থেকে পায়েলের শাশুড়ি ও ননদকে গ্রেফতার করা হয়।