ধর্মঘটে ভরসা অটো-টোটোই

বেআইনি গাড়ি বন্ধের দাবিতে শুক্রবার জেলাজুড়ে বাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল হুগলি জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সংগঠন‌। উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুর, বৈদ্যবাটি, চুঁচুড়া, চন্দননগর, মগরার মতো জায়গায় মানুষ ভরসা রেখেছেন অটো-টোটো বা ট্রেকারের উপরই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ০২:১০
Share:

ভরসা: টোটো চেপে যাতায়াত পান্ডুয়ায়। নিজস্ব চিত্র

বাস ধর্মঘটের জেরে শুক্রবার মিশ্র অভিজ্ঞতার সাক্ষী রইল হুগলি। সরকারি বাস বা পর্যাপ্ত অটো-টোটো চলায় শহর এলাকায় তেমন ভোগান্তি হয়নি। তবে গ্রামগঞ্জে বাসের অভাবে সমস্যায় পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। গাড়ি ভাড়া করে বা একাধিকবার অটো-টোটো বদল করে গন্তব্যে পৌঁছতে হয় নিত্যযাত্রীদের।

Advertisement

বেআইনি গাড়ি বন্ধের দাবিতে শুক্রবার জেলাজুড়ে বাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল হুগলি জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সংগঠন‌। উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুর, বৈদ্যবাটি, চুঁচুড়া, চন্দননগর, মগরার মতো জায়গায় মানুষ ভরসা রেখেছেন অটো-টোটো বা ট্রেকারের উপরই। জেলা সদর চুঁচুড়ার বাজার শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। আদালতেও কর্মবিরতি চলছে। ফলে, শহরে লোকের চাপ কম ছিল। তাই বাস না চললেও খুব একটা প্রভাব পড়েনি।

তবে, পোলবা, ধনেখালির মতো গ্রামাঞ্চলে যাতায়াত করতে রীতিমতো বেগ পেতে হয়েছে অনেককে। গন্তব্যে পৌঁছতে গ্যাঁটের কড়ি খরচ করতে হয়েছে অনেক বেশি। চুঁচুড়ার খড়ুয়াবাজারের বাসিন্দা বিদিশা সরকার পোলবা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মী। অন্যান্য দিন বাড়ির সামনে থেকে বাসে চেপে কর্মস্থলে যান। এ দিন টোটো চেপে চুঁচুড়া স্টেশনে আসেন। তার পরে অটো ভাড়া করতে হয়। পোলবার বিভিন্ন দফতরের কর্মীরা চুঁচুড়া স্টেশন থেকে মাথাপিছু ৬০-৭০ টাকা অটো ভাড়া দিয়ে কর্মস্থলে পৌঁছন।

Advertisement

স্ত্রীকে নিয়ে চুঁচুড়ার খাদিন‌া মোড়ে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন ধনেখালির দশঘড়ার বাসিন্দা মনোজ আলম। বাস ধর্মঘটের জেরে এ দিন তাঁকে ৭০০ টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘অন্যান্য দিন বাসে করে আসি। বাস না চলায় আজ দশ গুণ বেশি ভাড়া লাগল।’’ কালনার হাসপাতালে ভর্তি স্বামীকে দেখতে যাচ্ছিলেন পান্ডুয়া হঠাৎ কলোনির কবিতা পাল। বাস না পেয়ে ঘুরপথে ব্যান্ডেল হয়ে যেতে হল।

জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ অধিকর্তা শুভেন্দুশেখর দাস বলেন, ‘‘বিভিন্ন রুটে ২৫টি সরকারি বাস চালানো হয়েছে। অন্যান্য গাড়িও পর্যাপ্ত ছিল। বেশির ভাগ জায়গাতেই মানুষের খুব অসুবিধা হয়নি।’’ আরামবাগ থেকে কলকাতা পর্যন্ত ‘নন স্টপ’ বাস এ দিন চণ্ডীতলার বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলতে দেখা গিয়েছে। বাস মালিক সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি দেবব্রত ভৌমিক বলেন, ‘‘আরামবাগের উপর দিয়ে ভিন্‌ জেলার বাসগুলি চলেছে। তা ছাড়া সব রুটের বাসই বন্ধ ছিল। বাস না চলায় বহু জায়গাতেই মানুষ রাস্তায় বেরোননি।’’

বাস-মালিকদের হুঁশিয়ারি, এর পরেও বেআইনি গাড়ি বন্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা না দিলে আগামী ৩০ জুন থেকে লাগাতার ধর্মঘট করা হবে। তেমনটা হলে প্রশাসন কী ভাবে পরিস্থিতি সামলাবে, সেটাই প্রশ্ন। পরিবহণ দফতরের কর্তারা অবশ্য বলছেন, বেআইনি গাড়ির বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চা‌লানো হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement