সস্তার মাংস জোগাতেই চুরি করা হত শুয়োর

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত অনিল খিদিরপুরের হরিজনপল্লির বাসিন্দা। পেশায় ট্যাক্সিচালক হলেও বিভিন্ন ভাগাড় থেকে শুয়োর চুরির একটি চক্রে যুক্ত সে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, মূলত শীতের মরসুমে কলকাতায় শুয়োরের মাংসের চাহিদা বাড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৫০
Share:

রোষ: এই ট্যাক্সিতে চেপেই চার যুবক শুয়োর চুরি করতে এসেছিলেন বলে অভিযোগ। উত্তেজিত জনতা আগুন ধরিয়ে দেয় ট্যাক্সিতে।

হাওড়ার বেলগাছিয়ায় শুয়োর চুরি-কাণ্ডের তদন্তে উঠে এল নতুন তথ্য। পুলিশ সূত্রের খবর, মূলত সস্তায় শুয়োরের মাংসের জোগান দিতেই আবর্জনার মধ্যে থাকা শুয়োর চুরি করা হত। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই অনুমান পুলিশের। রবিবার শেষ রাতে শুয়োর চুরি করতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে ধরা পড়ে যায় খিদিরপুরের বাসিন্দা অনিল দলুই নামে এক ট্যাক্সিচালক। অনিলের বাকি তিন সঙ্গী পালিয়ে যায়। অনিলকে ধরার পড়ে লাঠি বা রড জাতীয় কিছু দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সে এখন হাওড়া জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গণপ্রহারের ওই ঘটনায় পুলিশ একটি মামলা রুজু করলেও সোমবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।

Advertisement

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত অনিল খিদিরপুরের হরিজনপল্লির বাসিন্দা। পেশায় ট্যাক্সিচালক হলেও বিভিন্ন ভাগাড় থেকে শুয়োর চুরির একটি চক্রে যুক্ত সে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, মূলত শীতের মরসুমে কলকাতায় শুয়োরের মাংসের চাহিদা বাড়ে। ওই চক্রটির কাজই হল, বিভিন্ন জায়গা থেকে শুয়োর চুরি করে তা শুয়োরের মাংসের দোকানে সরবরাহ করা। পুলিশ জানায়, মানুষের খাওয়ার জন্য নির্ধারিত করা রয়েছে সাদা রঙের শুয়োর। রাজ্যের বিভিন্ন পশুখামারে ওই ধরনের শুয়োর প্রতিপালন করা হয়। সেই শুয়োরের মাংসের দাম বেশি হওয়ায় তার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয় ভাগাড়ের আবর্জনার মধ্যে বেড়ে ওঠা ওই সব শুয়োরের মাংস। যা মানুষের খাওয়ার পক্ষে অনুপযুক্ত।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই চক্রের বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। হাওড়া হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মারের চোটে অনিলের ডান পা ও মুখের হাড় ভেঙেছে। দু’টি ক্ষেত্রেই অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। কিন্তু সোমবার পর্যন্ত তার বাড়ির লোকজন হাসপাতালে না আসায় তা সম্ভব হয়নি। হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তির অবস্থা স্থিতিশীল। আস্তে আস্তে কথাও বলতে পারছেন তিনি। নিজের বাড়ির ঠিকানা জানিয়েছেন। আমরা ওই ঠিকানা পুলিশকে দিয়েছি।’’

Advertisement

হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার যে ট্যাক্সিতে চেপে চোরের দল এসেছিল, সেটিতে আগুন দেওয়ার আগে ওই ট্যাক্সির ইঞ্জিন-সহ নানা দামি যন্ত্রাংশ, এমনকি সিটও খুলে নেওয়া হয়েছিল। যারা ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে এবং অনিলকে মারধর করেছে, তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন